সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে বসলেন মোবাইল নিয়ে। দেখলেন, সামাজিক মাধ্যমে অনেকেই সুপ্রভাতবার্তা দিয়ে পোস্ট করেছেন। কিন্তু তার মধ্যে একটি পোস্ট এসেছে ২০২৭ সাল থেকে। অর্থাৎ আজ থেকে ঠিক ৬ বছর পরের সকাল। অবাক হওয়ার মতোই বিষয় বৈকি। তবে এমনটাই দাবি করছেন স্পেনের এক ইনস্টাগ্রাম ইউজার। তাঁর বর্ণনা অনুযায়ী ততদিনে পৃথিবী থেকে সমস্ত প্রাণী বিলুপ্ত (Mass Extinction) হয়ে গিয়েছে। কেবল তিনিই বেঁচে রয়েছেন। আর সেখান থেকেই যোগাযোগ করছেন ২০২১ সালের মানুষদের সঙ্গে।
ভবিষ্যতকে জানার ইচ্ছা মানুষের চিরকালই রয়েছে। আর বর্তমান সময়ে সেই ইচ্ছা আরও অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। কল্পবিজ্ঞানের গল্পের মতো যদি সশরীরে ভবিষ্যতটা দেখে আসা যেত, তাহলে অনেকটাই তৃপ্তি পাওয়া যায়। কিন্তু যদি ভবিষ্যত থেকেই কেউ তথ্য সরবরাহ করতে থাকেন, তাহলেই বা মন্দ কী? তবে সেই বর্ণনা মানুষ কতটা বিশ্বাস করবেন, সেই সন্দেহ থেকেই যায়। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি প্রথম ভিডিও আপলোড করেন জেভিয়ার্স নামের এই ব্যক্তি। সেখানে তাঁকে দেখা যায় এক মরুপ্রায় রাস্তার উপর দিয়ে ঘুরে বেড়াতে। তিনি জানান, সেটা আসলে স্পেনেরই রাস্তা। এবং তিনি হাসপাতাল থেকে হঠাৎ জেগে উঠে সেই রাস্তায় এসে পড়েছেন। এই প্রথম ভিডিওটি অবশ্য অনেকেরই বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়েছিল। কিন্তু তারপর আরও বেশি মানুষের বিশ্বাস অর্জন করতে গিয়েই নানা কাণ্ড করে বসলেন জেভিয়ার্স।
একের পর এক ভিডিওতে ২০২৭ সালের স্পেনের দৃশ্য তুলে ধরতে থাকেন জেভিয়ার্স। সেখানে কোনো প্রাণীকে দেখা যায় না ঠিকই। তবে দিব্যি সবুজ পাতা মাথায় নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে অসংখ্য গাছ। যে মহামারী সমস্ত প্রাণীকে বিলুপ্ত করে দিয়েছে, তা গাছেদের উপর কোনো প্রভাব ফেলেনি, এমনটা মেনে নিতে চাইছেন না অনেকেই। তাছাড়া কোনো মানুষ না থাকা সত্ত্বেও রাস্তাঘাট থেকে শপিং মল সব জায়গাতেই বিদ্যুতের যোগান রয়েছে। চলছে প্রতিটি এস্ককেলেটরও। এই নিয়েও প্রশ্ন করতে দেখা গিয়েছে অনেককে। আর সবচেয়ে বড়ো প্রশ্ন হল, কীভাবে তাঁর প্রতিটি ইনস্টাগ্রাম পোস্ট ঠিক ৬ বছর আগের পৃথিবীর মানুষ দেখতে পাচ্ছেন?
ইংল্যান্ডের ‘দ্য সান’ পত্রিকার একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে ৮৮ শতাংশ মানুষই জেভিয়ার্সকে বিশ্বাস করেননি। ৮ শতাংশ মানুষ এই নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি। মাত্র ৪ শতাংশ মানুষ মনে করছেন, জেভিয়ার্স সত্যি কথাই বলছেন। শেষতম ভিডিওটিতে জেভিয়ার্স একটি গাড়ির দোকানে গিয়ে প্রায় চুরিই করলেন একটি গাড়ি। অবশ্য চোর ধরার জন্যও তো কেউ নেই। সেই গাড়ির দরজার তালার প্রযুক্তি দেখিয়ে জেভিয়ার্স প্রমাণ করতে চেয়েছেন, ২০২১ সালে কোনো কোম্পানির গাড়িতেই এমন প্রযুক্তি নেই। কিন্তু এরপরেও কি তাঁর কথা বিশ্বাস করবেন মানুষ?
Powered by Froala Editor