বহু বছর পর কলকাতার রাস্তায় নির্দ্বিধায় ঘুরে বেড়াচ্ছে সাইকেল। এমন দৃশ্য তো সচরাচর দেখা যায় না। সেইসঙ্গে প্রাণ ফিরে পেয়েছে সাইকেল ব্যবসাও। এতদিন কোনক্রমে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছিলেন কলকাতার সাইকেল ব্যবসায়ী এবং মেরামতি মিস্ত্রিরা। ব্যস্ত রাস্তায় না হলেও, অলিতে গলিতে তো সাইকেল নিয়ে ঘোরেন অনেকেই। কিন্তু সেই চাহিদা এতটাই কম যে তাতে দিনের শেষে ব্যবসার লাভের অঙ্কে ফাঁকি পড়ে। কিন্তু গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে অবস্থাটা একেবারেই অন্যরকম। হঠাৎ এই ব্যবসাই লাভদায়ক হয়ে উঠেছে। আর এই ঘটনারও সৌজন্যে অবশ্যই করোনার দিনগুলি।
দেশজুড়ে লকডাউন শিথিল হয়েছে ১ জুন থেকে। সেইসঙ্গে ৮ জুন থেকে খুলে গিয়েছে কলকাতার সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি অফিস। অথচ করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা এখনও যায়নি। বরং পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শহরে সংক্রমণের সংখ্যা। এমন পরিস্থিতিতে বাস, অটো বা পাবলিক ট্রান্সপোর্টে যাতায়াত করতে সাহস পাচ্ছেন না অনেকেই। আর এর মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা অনেককেই অনুপ্রাণিত করেছে। সরকারের নির্দেশ মেনে শহরের রাস্তায় সাইকেল চলাচলের অনুমতি দিয়েছে পুলিশ কমিশনারেট। আর সাধারণ মানুষও সেই সুবিধা সাদরে গ্রহণ করেছে।
এই সময়ে নতুন সাইকেল যেমন বিক্রি হচ্ছে, তেমনই পুরনো সাইকেলের মেরামতিও করাচ্ছেন অনেকে। আর এই অনেকের মধ্যে যেমন আছেন কোনো বহুজাতিক সংস্থার কর্মচারী, তেমনই গড়িয়াহাটের হকার, অথবা ডাক্তার কিম্বা শিক্ষক। প্রত্যেকেই গ্রহণ করেছেন এই দুই চাকার যান। এবং পরিস্থিতি এমন যে আগামী সপ্তাহের মধ্যেই বাজারে সাইকেলের জোগানে ঘাটতি দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের।
তবে সাইকেল যে শুধু করোনা সংক্রমণের সম্ভাবনাই কমাচ্ছে, এমন নয়। আজকের দূষিত পরিবেশে সাইকেল সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য সবুজ বান্ধব যান। অথচ কলকাতা শহরের রাস্তায় দীর্ঘদিন ধরে সাইকেল চলাচল বেআইনি। এই নির্দেশিকা নিয়ে সরব অনেক সংগঠন। তাঁরা মনে করছেন, এই করোনা পরিস্থিতিই হয়তো সরকারের ‘ভুল’ সিদ্ধান্ত মুছে ফেলে একটা দূষণমুক্ত শহর গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।
আরও পড়ুন
যাতায়াতের সুবিধার জন্য সাইকেলে ছাড় রাজ্য সরকারের
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
লকডাউনে বেসামাল, বন্ধ হল স্বাধীন ভারতের প্রথম সাইকেল প্রস্তুতকারক সংস্থা অ্যাটলাস