ভাইরাসের আক্রমণে প্রাণ হারিয়েছিলেন প্রাচীন ভাইকিং উপজাতির মানুষও

ভাইরাস, খালি চোখে দেখা না গেলেও যেন এক মূর্তিমান আতঙ্ক। বর্তমানে তো গোটা পৃথিবীকেই স্তব্ধ করে রেখেছে করোনা ভাইরাস। কিন্তু আমরা যদি সময়ের মানচিত্র ধরে কিছুটা পিছিয়ে যাই, তাহলেও  অবশ্য ভাইরাসের উৎপাতের কম নমুনা পাওয়া যায় না। তেমনই একটি ভাইরাস ভ্যারিওলা ভাইরাস। বর্তমানে প্রায় বিলুপ্ত হলেও এই ভাইরাসের কারণেই একসময় স্মল পক্সের মতো ভয়ঙ্কর রোগে আক্রান্ত হত মানুষ।

এই স্মল পক্সের চিকিৎসা করতে গিয়েই সংক্রমণের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন লুই পাস্তুর। কিন্তু ঠিক কতদিন ধরে এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন মানুষ? তার কোনো সঠিক ইতিহাস অবশ্য নেই। তবে এবার সেই ইতিহাসের খোঁজ করতে গিয়েই অদ্ভুত তথ্য পেলেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা। গবেষণায় দেখা গিয়েছে প্রায় হাজার বছর আগে ইউরোপের উত্তরে নরওয়ে অঞ্চলে যে ভাইকিং উপজাতি বাস করত, তাদের শরীরেও বাসা বেঁধেছিল ভ্যারিওলা ভাইরাস। অন্তত সেই সময়ের মানুষের দেহাবশেষ পরীক্ষা করে তার নমুনা খুঁজে পেয়েছেন তাঁরা।

সম্প্রতি 'সায়েন্স' পত্রিকায় প্রকাশিত এই গবেষণা মুগ্ধ করেছে অনেককেই। ম্যাক-মাস্টার ইউনিভার্সিটির জিনতত্ত্বের গবেষক আনা দুগ্গান জানিয়েছেন, এই গবেষণা ভাইরাসের চরিত্র নির্ণয়ে অনেক নতুন তথ্য তুলে ধরতে পারে। বিশেষ করে একসময় বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে যেসব ভাইরাস, তাদের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া গেলে গবেষণার অনেকটাই সুবিধা হবে। মোটামুটি ৩১০০০ বছর থেকে ১০০০ বছর পুরনো জীবাশ্ম থেকে নমুনা সংগ্রহ করে মোটামুটি ১৩টি শরীরে ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছে। যার মধ্যে ১১টি শরীরই মানুষের। এর মধ্যে ভাইকিং উপজাতির মানুষের শরীরে ভ্যারিওলা ভাইরাসের অস্তিত্ব বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। এমনকি এই উপজাতির শরীর থেকেই সারা ইউরোপে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে। কিন্তু এইসব সূত্রের থেকেও গবেষণার পদ্ধতির উপরেই বেশি জোর দিতে চাইছেন বিশেষজ্ঞরা। আজকের পরিস্থিতির সঙ্গে ইতিহাসের যদি কোথাও মিল খুঁজে পাওয়া যায়, তাহলে একটা আলাদা আগ্রহ তো জন্মাবেই।

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
মস্তিষ্কেও ভয়ঙ্কর প্রভাব ফেলছে করোনা ভাইরাস; নতুন গবেষণা ঘিরে চাঞ্চল্য