আশেপাশে ঘুরছে শত্রুপক্ষের বিমান। তার মধ্যে দাঁড়িয়ে আছেন তিনি; সঙ্গে রয়েছে নিজের প্রিয় বিমানটি। দক্ষতা, বিশ্বাস ও সাহসে ভর করে রুখে দাঁড়ালেন শত্রুদের বিরুদ্ধে। একা হাতে চার চারটে ইজরায়েলি যুদ্ধবিমানকে শেষ করলেন তিনি। যা চমকে দিয়েছিল সবাইকে। তখন থেকেই কিংবদন্তি হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে গিয়েছিলেন ফাইটার পাইলট সইফুল আজম। বাংলাদেশের এই প্রবাদপ্রতিম সেনানায়কের জীবনাবসান হল সোমবার। বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।
ঢাকার কম্বাইন্ড মিলিটারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সইফুল আজম। যে সময় তাঁর উড়ান শুরু হয়েছিল, তখনও বাংলাদেশ নামের কোনো রাষ্ট্রের উদ্ভব ঘটেনি। পাকিস্তান বায়ু সেনা হিসেবেই তিনি যোগ দেন ফোর্সে। সেখান থেকেই এক একটি যুদ্ধে অংশ নেন তিনি। ১৯৬৫, ১৯৬৭— পরপর এই দুটি যুদ্ধেই পাকিস্তানের হয়ে ফাইটার পাইলট হিসেবে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন। যেখানে দেশ হিসেবে নয়, তাঁর দক্ষতা আর সাহসকেই কুর্নিশ জানিয়েছিল সবাই। একা হাতে ইজরায়েলের চার চারটে যুদ্ধবিমানকে নিকেশ করা তো বটেই; পরবর্তীকালে এরকম আরও নজির তৈরি করেন তিনি।
সইফুল আজম বাংলাদেশের একমাত্র ফাইটার পাইলট, যিনি জর্ডন-ইরাক-পাকিস্তান - তিনটে দেশের হয়ে যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। পাকিস্তানের মিলিটারি বিভাগের তৃতীয় সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘সিতারা-ই-জুরাৎ’ তো পেয়েছিলেনই; সঙ্গে আমেরিকা-সহ আরও বেশ কিছু দেশের বিরল সম্মানও পেয়েছিলেন সইফুল সাহেব। বাংলাদেশের সিভিল অ্যাভিয়েশন অথরিটির প্রধান ছিলেন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে শুধু বাংলাদেশই নয়, শোকপ্রকাশ করেছেন আমেরিকা, প্যালেস্টাইনের রাষ্ট্রদূতরাও।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
ভারতের প্রথম ডাকঘর মেদিনীপুরের খেজুরিতে, সংরক্ষণের অভাবে ধুঁকছে সেই ইতিহাস