দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে সমপ্রেমকে আইনি স্বীকৃতি থাইল্যান্ডের

জন্মসূত্রে পুরুষ হলে জন্মালে ভালোবাসতে হবে কোনো মেয়েকে। ঠিক একই নিয়ম প্রযোজ্য বিপরীত দিকেও। এটাই সমাজের নিয়ম। কিন্তু ভালোবাসা কি আদৌ কোনো নিয়ম মানে? তবুও সমাজের কাছে আত্মসমর্পণ করতে হয় অসংখ্য নিষ্পাপ ভালোবাসাকে। তার সঙ্গে আছে রাষ্ট্রের আইন। যদিও আজকাল অনেক দেশেই সমপ্রেমকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে। আর সেই তালিকাতেই যুক্ত হল থাইল্যান্ডের নাম। সেইসঙ্গে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় প্রথম কোনো দেশে আইনি স্বীকৃতি পেল সমপ্রেম।

সম্প্রতি থাইল্যান্ড সরকারের পক্ষ থেকে একটি বিল দ্বারা সমলিঙ্গের মানুষের সম্পর্ককে বৈধতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যদিও বিলের শিরোনামে বলা হয়েছে 'সেম-সেক্স ইউনিয়ন'। কেন 'সেম-সেক্স ম্যারেজ' নয়, সে-বিষয়ে স্পষ্ট কোনো উত্তর দেওয়া হয়নি। তবে বিলের বিষয়বস্তুর উপরেই দৃষ্টি দিতে চাইছেন রেনবো স্কাই অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা। কিত্তিনান ধর্মধ্বজের মতে তাই, এই বিলকে স্বাগত জানাতে কোনো আপত্তি থাকার কথা নয়।

এই বিল অনুযায়ী যে কোনো সমপ্রেমী দম্পতি কোনো সন্তান দত্তক নিতে পারবেন, তাঁদের বিষয়সম্পত্তি একসঙ্গে নথিভুক্ত করতে পারবেন, এমনকি একজনের মৃত্যুর পর অন্যজন তাঁর সম্পত্তির অধিকার পাবেন। কিন্তু সামাজিক নীতিকে যাতে আঘাত করা না হয়, তাই এই সম্পর্ককে বিবাহের মর্যাদা দিতে রাজি নয় সরকার। তাছাড়া, এখনও পর্যন্ত থাইল্যান্ডে লিঙ্গ-পরিবর্তনকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। তাই এক্ষেত্রে রূপান্তরকামী মানুষরা একইভাবে বঞ্চিত থেকে গেলেন।

গতবছর তাইওয়ান আইন করে সমপ্রেমী বিবাহকে স্বীকৃতি দিয়েছে। এশিয়ায় সেটাই প্রথম। এর পরে থাইল্যান্ডে প্রতিবাদ আন্দোলন জোরালো হতে থাকে। থাইল্যান্ড সরকার দীর্ঘদিন ধরে পর্যটন বিভাগের বিজ্ঞাপনে দেশকে গে-প্যারাডাইস বলে উল্লেখ করে আসছেন। কিন্তু এইসব মানুষদের প্রতি আইনি বঞ্চনা জারি ছিল একইভাবে। সেই অভিযোগের সামনে পরেই এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হল সরকার। যদিও এই আইনের অনেক সীমাবদ্ধতা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে। কিন্তু সারা পৃথিবীর মুক্তিকামী মানুষের লড়াইতে একটা উল্লেখযোগ্য ঘটনা হিসাবে থেকে গেল থাইল্যান্ডের এই আইনি স্বীকৃতি।

Powered by Froala Editor