একদিকে যুদ্ধের প্রস্তুতি, আচমকা গুলিবর্ষণ, আর তারই মধ্যে বন্ধুত্বের নতুন গল্প বুনছে ইউক্রেন (Ukraine)। ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর সঙ্গে এক রাস্তার কুকুরের (Dog) বন্ধুত্ব। এক শীতের সন্ধ্যায় মরণাপন্ন যে কুকুরটিকে শিবিরে আশ্রয় দিয়েছিল সেনাবাহিনী, আজ সেই কুকুরটি হয়ে উঠেছে তাদেরই একজন। সেনাকর্তারা ভালোবেসে নাম রেখেছেন র্যাম্বো। এই যুদ্ধপরিস্থিতিতেও বন্ধুদের ছেড়ে যায়নি র্যাম্বো। বরং সে নিজেও হয়ে উঠেছে ইউক্রেনের এক সেনানী। ছোট্ট সারমেয়টিকে প্রত্যেক সেনাই নিজেদের সহকর্মী বলে মনে করেন।
কয়েক বছর আগে ইউক্রেনের বাহমুত সেনা শিবিরের সামনে টহল দিতে দিতে হঠাৎ এক পল্টনের নজরে আসে রাস্তার ধারে কিছু একটা নড়াচড়া করছে। কাছে গিয়েই ছোট্ট কুকুর শাবকটিকে দেখতে পান তাঁরা। ততক্ষণে শীতে প্রায় জমে গিয়েছে তার শরীর। হাঁটাচলার কোনো ক্ষমতাই আর নেই। সেনারা তখনই তাকে সঙ্গে করে নিয়ে আসেন।
এই যুদ্ধের সময়ে সেই দিনগুলোর কথা আবারও মনে পড়ে যাচ্ছে সেনাদের। শিবিরে নিয়ে আসার পর একটু একটু করে সুস্থ করে তোলা হয় তাকে। আর কুকুরটিও বুঝতে পারে, এই মানুষরা তার কোনো ক্ষতি করবে না। বাহমুতের এক সেনা আধিকারিক সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, র্যাম্বোকে যখন নিয়ে আসা হয়েছিল তখন তার দৈর্ঘ্য ছিল মাত্র ৮ ইঞ্চি। সেনা কর্তাদের হাতের তালুতেই ঘুমিয়ে পড়ত সে। দেখতে দেখতে তার বয়স বেড়েছে, আয়তনও বেড়েছে। কিন্তু সেনাবাহিনীর সঙ্গে তার সম্পর্কের কোনো বদল হয়নি।
অবশ্য ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর সঙ্গে বন্য প্রাণী ও কুকুরদের বন্ধুত্বের গল্প নতুন নয়। অভিশপ্ত চের্নোবিলের জনশূন্য এলাকায় যে সমস্ত কুকুর ও অন্যান্য প্রাণী ঘুরে বেড়ায়, তাদের সঙ্গেও সেনাবাহিনীর সম্পর্ক বেশ ভালো। কোনো কোনো সৈনিক শুধুই সেই সমস্ত প্রাণীর টানে চের্নোবিলে পোস্টিং নিতে চান। বাহমুত সেনাশিবিরেও র্যাম্বো ছাড়া আরও প্রায় এক ডজন সেনা কুকুর রয়েছে। প্রত্যেককেই সরকারিভাবে সেনাবাহিনীর সদস্যপদও দেওয়া হয়েছে। শত্রুদের গতিবিধি লক্ষ্য করে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীকে সতর্ক করে দেওয়াই তাদের কাজ। আর র্যাম্বো এখন তাদের সবার দলপতি। মানুষের সঙ্গে কুকুরের সম্পর্কের অসংখ্য গল্পের মধ্যেই আরেকটি অনবদ্য সংযোজন র্যাম্বোর কাহিনি।
Powered by Froala Editor