লাদাখ ও ভারত-চিন যুদ্ধ পরিস্থিতি— করোনার মধ্যে কোথায় যাবে সংঘাতের চিত্র?

বিজ্ঞানীরা নাকি বলছেন, যারা উঁচু পার্বত্য অঞ্চলে থাকেন, তাঁদের ক্ষেত্রে করোনা সংক্রমণ কম হচ্ছে। তা সত্ত্বেও, সাবধানের মার নেই! ঘরে থাকাটাই শ্রেয়। ভারতের শান্ত, সুন্দর পাহাড়ি অঞ্চলের ইতিউতি ছড়িয়ে আছে আশঙ্কা। তাও জীবন চলছে। কিন্তু এসবের মাঝেই কেঁপে কেঁপে উঠছে আওয়াজ। দূরে দেখা যায় সীমান্তের কাঁটাতার। তার দুই পাড়েই জড়ো করা হচ্ছে অস্ত্রশস্ত্র। বড়ো বড়ো কামান, সঙ্গে সার বেঁধে ভারী বুটের আওয়াজ। ব্যাপার কী? আশঙ্কা আরও তীব্র হল। তাহলে কি এমন পরিস্থিতিতে যুদ্ধ হবে ভারতে?

ভারত-চিন সংঘাত এই প্রশ্ন, বলা ভালো এই ভয়টাই তুলে ধরল আমাদের সামনে। সীমান্তের পারদ যে ক্রমশ চড়ছে, তার আন্দাজ পাওয়া গিয়েছিল মে মাসের শুরুতেই। লাদাখের নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সেনা সমাবেশ বাড়াতে থাকে চিন। যত সেনা বাড়তে থাকে, আতঙ্কও সমানুপাতিক হারে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। দেখাদেখি ভারতের দিক থেকেও ‘প্রস্তুতি’ নেওয়া শুরু হয়। পরিস্থিতি যে ক্রমশ খারাপের দিকে যাচ্ছে, সেটা বুঝতে দেরি করেননি সেনা আধিকারিকেরা। যুদ্ধের ব্যবধান তখন মাত্র কয়েক কিলোমিটার! 

ঘটনা যাতে সেই দিকে না গড়ায়, তারই উদ্যোগ নিতে শুরু করেছিল ভারত সরকার। চিনের দিক থেকেও নরম মনোভাব আসে কিছু সময় পর। তবে এখনও যে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হয়নি তা বলাই বাহুল্য। আমেরিকাও এই ব্যাপারে নিজের মতামত দিয়েছে। সব মিলিয়ে ভারতের উত্তর ও উত্তর-পূর্ব সীমান্ত ভয়ানক পরিস্থিতির সামনে। 

এই মুহূর্তে চিনই বলুন বা ভারত— কেউই খুব সুস্থ অবস্থায় নেই। করোনায় চিনের কী অবস্থা বলার অপেক্ষা রাখে না। ভারতেও পরিস্থিতি মারাত্মক। অর্থনীতি অচল, তার ওপর একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এমন সময় যদি চিন সীমান্তে অসন্তোষ দেখা দেয়, যুদ্ধ শুরু হয় সেটা সামলে ওঠার ক্ষমতা কি আমাদের আছে? মূল সমস্যা তো সেই ‘জমি বিবাদ’! কোনটা ভারতের অঞ্চল, কোনটা চিনের, তা নিয়ে বিবাদ চলেই আসছে। কিন্তু গুলির লড়াই সেরকম হয়নি। পাকিস্তান সীমান্তের থেকে এখানেই তফাৎ ইন্দো-চিনের। কিন্তু এখন সেই ‘শান্তি’তেই বিঘ্ন ঘটছে। নানা সময় একে অপরের সীমানায় ঢুকে পড়ার অভিযোগ করে থাকে দুপক্ষের সেনারাই। কিন্তু এরকম সেনা সমাবেশ খুব কম দেখা গেছে। বলা হচ্ছে, মে’র শুরুর দিকে দুই পক্ষের মধ্যে গুলি বিনিময়ও হয়। এখানেই প্রমাদ গুনছেন বিশেষজ্ঞরা। 

আরও পড়ুন
খাবারের সঙ্গে পাখির ভিতরে যাচ্ছে প্লাস্টিকও, চিন্তিত পরিবেশবিদরা

দুই দেশই যাতে ঠান্ডা মাথায় অবস্থার পর্যবেক্ষণ করে, সেটার কথাই বলা হচ্ছে বারবার। করোনার পরিস্থিতিতে হঠাৎ এমন পরিস্থিতিই বা কেন তৈরি হল, তা নিয়েও উদ্বিগ্ন অনেকে। যদি হাতের বাইরে বেরিয়ে যায়, তাহলে ভারতের অর্থনীতির কফিনে শেষ পেরেকটি পুঁততে যে বেশি সময় লাগবে না তা একপ্রকার বলেই দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। আপাতত পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে যাতে ব্যাপারটা স্তিমিত হয় সেই চেষ্টাই করা হচ্ছে। আরও একটা ১৯৬২ যাতে না আসে, তারই প্রার্থনায় সবাই…

আরও পড়ুন
চিনের গ্রামে দশ হাজারেরও বেশি গাছ লাগালেন বিশেষভাবে সক্ষম দুই বন্ধু

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
সেরে উঠেও রেহাই নেই চিনে, ১৪% মানুষ দ্বিতীয়বার আক্রান্ত করোনায়

More From Author See More

Latest News See More