কয়েক বছর আগেই বৃক্ষশূন্য হয়ে পড়েছিল এই বন। চারিদিকে কোথাও সবুজের দেখা মিলত না। অথচ সাম্প্রতিক স্যাটেলাইট ছবি দেখে চমকে উঠেছেন সকলেই। ১৬০ একর এলাকাজুড়ে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে সবুজ বনানী। আর তার মধ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে পাখির দল। তেলেঙ্গানার কাওয়াল টাইগার রিজার্ভের নিকটবর্তী হারিয়ে যাওয়া অরণ্য এভাবেই ফিরে আসছে তার হৃত গৌরব সঙ্গে নিয়ে।
বর্তমান সময়ে সারা পৃথিবীজুড়ে অরণ্য ধ্বংসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ উঠছে। কিন্তু যে সমস্ত বনভূমি ইতিমধ্যে নষ্ট করে ফেলা হয়েছে, তাদের কি আবার নতুন করে বাঁচিয়ে তোলা সম্ভব? তেলেঙ্গানা বনবিভাগের এই সাফল্য কিন্তু ইতিবাচক উত্তরই দিচ্ছে। কিন্তু কীভাবে সম্ভব হল এই ঘটনা? বনবিভাগের কর্তাদের মতে, এখানে সবচেয়ে বড়ো ভূমিকা পালন করেছে জনসচেতনতা। এছাড়া উপযুক্ত পরিকল্পনা তো ছিলই। এই অরণ্য ধ্বংস হয়েছিল মূলত স্থানীয় বাসিন্দাদের কারণেই। তাই ২০১৫ সালে শুরু হয় গ্রামবাসীদের সঙ্গে আলোচনা।
দীর্ঘ সচেতনতা প্রকল্পের পর গ্রামবাসীরা অরণ্যের প্রয়োজন বুঝতে পেরেছিলেন। সেইসঙ্গে তাঁরা নিজেরাই অরণ্যের দেখভালের বিষয়েও রাজি হয়েছিলেন। কিন্তু অরণ্য কোথায়? গাছ তো আর বাকি নেই কিছুই। অতএব সবার আগে গাছ লাগাতে হবে। আর একদিনেই প্রায় ১ লক্ষ চারাগাছ রোপণ করা হল। প্রথমদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রায়ও। এরপরেও প্রায় এক মাস ধরে চলল গাছ লাগানো।
বনবিভাগের মতে, যেহেতু যান্ত্রিক পদ্ধতির পরিবর্তে সাধারণ মানুষকে দিয়েই গাছ লাগানো হয়েছে, তাই বৃক্ষরোপণের কর্মসূচিও অনেক বেশি সহজ হয়েছে। আরও বেশি গভীরে পৌঁছতে পেরেছেন তাঁরা। তবে এই উদ্যোগ কতটা সফল হবে, তা নিয়ে সন্দেহ ছিলই। তবে ৬ বছর পর স্যাটেলাইট ছবিতে স্পষ্ট দেখা গেল সবুজের সমারোহ। এখনও অবশ্য গাছগুলি পরিণত হয়ে ওঠেনি। কিন্তু প্রকল্প যে প্রাথমিকভাবে সফল, সে-কথা বলাই যায়। আর এই উদ্যোগ আগামীদিনে অন্যান্য রাজ্য ও দেশকেও পথ দেখাবে, সে বিষয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই।
আরও পড়ুন
দীর্ঘ ৪১ বছর অরণ্যবাস, ভিয়েতনামের ‘টারজান’ জানেন না নারীজাতির অস্তিত্ব সম্পর্কেও!
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
বনসাই দিয়েই তৈরি মিনি অরণ্য! জাপানের ‘ম্যাজিকাল টেকনিশিয়ান’ কিমুরা-র কীর্তি