গোটা পৃথিবী এই মুহূর্তে এক মহামারীর মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। করোনা ভাইরাস গ্রাস করেছে প্রতিটা ক্ষেত্র। আমাদের দেশও তার বাইরে নেই। তার মধ্যেও যেভাবে যতটুকু সম্ভব জীবনে ফেরার চেষ্টা করছি সবাই। শুধু তাই নয়, এই করোনা পরিস্থিতি এবং লকডাউন মানুষ হিসেবে আমাদের চিনতে শিখিয়েছে। আমাদের নিজেদের বুঝতে শিখিয়েছে। অনেকেই নিজের সাধ্যমতো এগিয়ে এসেছেন মানুষের পাশে। যেমন তামিলনাড়ুর এই চা বিক্রেতা। নিজের উপার্জনের মধ্যেই চেষ্টা করেছেন তাঁর থেকেও গরিব মানুষদের পাশে দাঁড়াতে।
নাম তামিলারসান। মাদুরাইয়ের এই চা বিক্রেতা প্রতিদিন দুইবেলা বেরিয়ে পড়েন নিজের সাইকেলটি নিয়ে। সেটাই তাঁর একমাত্র সম্বল। সঙ্গে থাকে অন্যান্য উপকরণ। আলানকানাল্লুর, মেত্তুপাত্তি, পুদুপাত্তি-সহ কাছের গ্রামগুলোতে চা ফেরি করে বেড়ান। এটাই তাঁর একমাত্র জীবিকা। সকালে, সন্ধ্যায় ঘুরে ঘুরে যা রোজগার হয় তাতেই তাঁর চলে যায়। বেশি চাহিদা নেই তামিলারসানের।
এইভাবে চা ফেরি করতে করতেই দেখেন রাস্তার ধারে, মন্দিরের পাশে বসে আছেন বহু মানুষ। যাঁদের অবস্থা তাঁর থেকেও খারাপ। মাথার ওপর ছাদ নেই, পরনে কাপড়ের ঠিক-ঠিকানা নেই। খাবার কোনোদিন জোটে, কোনোদিন জোটে না। করোনার সময় এঁদের সুরক্ষার দিকে কেউই নজর দেয় না। এঁরাও তো মানুষ! এঁরাও তো বাঁচবে! তামিলারসান নিজেই উদ্যোগ নেওয়া শুরু করলেন। চা বিক্রি করে যা উপার্জন হয়, তার থেকেই খাবার কিনে ওই মানুষগুলোর হাতে তুলে দেন তিনি। অনেক সময় টাকাও দিয়ে আসেন। এছাড়াও প্রতিদিন নিয়ম করে বিনামূল্যে চা খাইয়ে আসেন তিনি। নিজে যা আয় করেন, তার মধ্যে থেকেই এত কিছু করেন। তামিলারসানের স্বপ্ন, একদিন তাঁর নিজের একটি দোকান খুলবে। তখন সাইকেলে করে রোজ বেরোতে হবে না। এই দোকানেই মানুষগুলোকে বসিয়ে খাওয়াতে পারবে। সবাই মিলে তৈরি হবে খুশির পরিবেশ। হয়ত শীঘ্রই সেই স্বপ্ন পূরণ হবে। ততদিন, সাইকেলের চাকা ঘুরে চলেছে…
চিত্রঋণ- The Logical Indian
আরও পড়ুন
সন্তানের ক্লাসের জন্য প্রয়োজন স্মার্টফোন, একমাত্র সম্বল গরুটিও বিক্রি করলেন গোয়ালা
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
শুধু নিজেরই নয়, আরও তিনজনের বাল্যবিবাহ আটকে দিল ১৫ বছরের চাঁদনী