তিন দশক ধরে প্রতিদিন ১৫ কিলোমিটার হেঁটে চিঠি পৌছে দিয়েছেন এই ‘রানার’

আজকাল মোবাইলের যুগে চিঠি লেখার অভ্যাস আমরা প্রায় ছেড়েই দিয়েছি। কেবল কিছু অফিসিয়াল কাজের প্রয়োজনে চিঠি লিখতে হয়। অবশ্য সারা দেশের ছবিটা একদমই সেরকম নয়। এখনও অনেক জায়গায় বিদ্যুতের লাইন পৌঁছোয়নি, টেলিফোন কানেকশন অনেক দূরের কথা। আর সেখানে সাধারণ মানুষের সঙ্গে বাইরের পৃথিবীর যোগাযোগ বজায় রাখতে এখনও নিরলস পরিশ্রম করে চলেন ডাক হরকরার দল। তেমনই একজন মানুষ তামিলনাড়ুর ডি সিভান। কর্মজীবনের শেষে এসে যে মানুষটা এতদিনের পরিশ্রমের কিছুটা স্বীকৃতি পাচ্ছেন।

দুর্গম পাহাড় আর জঙ্গলে ঘেরা কন্নর অঞ্চলে কাজ করতেন ডি সিভান। কিছুদিন আগে পর্যন্তও সমস্ত বিপদ অগ্রাহ্য করে দিন অন্তত ১৫ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে মানুষের ঘরে ঘরে চিঠি পৌঁছে দিতেন তিনি। কখনো বন্য জন্তুর আক্রমণ, কখনও প্রাকৃতিক দুর্যোগ; তাঁকে এই প্রতিদিনের রুটিন থেকে টলাতে পারেনি কিছুই। তবে দীর্ঘ তিন দশকের কর্তব্যের পর এবার অবসর নিচ্ছেন তিনি। তাঁর মতোই বিশ্রাম নিচ্ছে তাঁর জুতো জোড়াও।

তবে এই নিভৃত সৈনিকের কাহিনি হয়তো এখনও অজানাই থেকে যেত সারা দেশের মানুষের। তাঁকে মনে রাখতেন শুধু সেই মানুষরা, যাঁদের বাড়িতে নিয়মিত চিঠি হাতে কড়া নাড়তেন তিনি। কিন্তু তাঁর অবসর গ্রহণের সমস্তকিছু ঠিক হয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর কথা ছড়িয়ে পড়ল সারা দেশের নেটিজেনদের মধ্যে। আর সৌজন্যে অবশ্যই সামাজিক মাধ্যম। আইএএস অফিসার সুপ্রিয়া সাহু সম্প্রতি টুইটারে একটি পোস্ট লেখেন সিভানকে নিয়ে। সেখানে তিনি বর্ণনা করেছেন, কীভাবে সমস্ত বিপদ অগ্রাহ্য করে চার দশক ধরে কাজ করে গিয়েছেন সিভান। আর মাত্র কিছুক্ষণের মধ্যেই ভাইরাল হয়ে যায় সেই পোস্ট। অসংখ্য মানুষ দেশের নানা প্রান্ত থেকে কুর্ণিশ জানান এই মানুষটিকে।কর্মজীবনের শেষ মুহূর্তে এসে এই স্বীকৃতির জন্য কি আদৌ প্রস্তুত ছিলেন সিভান?

Powered by Froala Editor

Latest News See More