৮৫ বছরের বৃদ্ধা কে কমলাথল। ৩০ বছর ধরে তামিলনাড়ুর কোয়েম্বাটোর শহরে ইডলি বিক্রি করছেন তিনি। দাম মাত্র এক টাকা। এই ৩০ বছরে বাজারে জিনিসপত্রের দাম আকাশছোঁয়া হলেও তিনি ইডলির দাম বাড়াননি। দেশের অনেক মানুষ হয়তো এখনও বেশি দাম দিয়ে খাবার কেনার মতো সামর্থ্য রাখেন না। এই ৩০ বছরে তাঁর এমন উদ্যোগ খুব বেশি সম্মান পায়নি। কিন্তু দেশজুড়ে করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই হঠাৎ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন তিনি। বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে তাঁর প্রশংসায় সরব নেটিজেনরা। এই লকডাউনের মধ্যেও কাজ বন্ধ রাখেননি। এই সামান্য দামেই প্রতিদিন খাবার তুলে দিচ্ছেন অসংখ্য মানুষের হাতে।
লকডাউনের ফলে দেশের নানা প্রান্তে আটকে পড়েছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা। কোয়েম্বাটোর শহরের ছবিটাও ব্যতিক্রম নয়। সেখানেও অসংখ্য পরিযায়ী শ্রমিক কাজ হারিয়ে আটকে পড়েছেন। রোজগারের সমস্ত রাস্তা বন্ধ। আবার যোগাযোগ ব্যবস্থার অপ্রতুলতার কারণে বাড়ি ফিরে যেতেও পারছেন না। বাজারের দামে খাবার কিনে খাওয়া তাঁদের পক্ষে এককথায় অসম্ভব। ভাগ্যিস কমলাথল ছিলেন। তাই আজ সেইসব সহায়-সম্বলহীন শ্রমিকদের মুখে দুবেলার খাবার জুটছে।
এই লকডাউনের পরিস্থিতিতে তাঁর এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন অনেকেই। তাঁর কাছে খেতে আসা শ্রমিকরাও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। চড়া দামের কাঁচামাল কিনে এই দামে ইডলি বিক্রি হয়তো এককথায় অসম্ভব। কিন্তু তবু লোকসান সহ্য করেও কাজ করে যাবেন বলে জানিয়েছেন কমলাথল। অবশ্য তাঁর দিকে সাহায্যের হাতও বাড়িয়ে দিয়েছেন অনেকে। আজ যখন দেশের নানা প্রান্ত থেকে দারিদ্র্য আর অনাহারের মধ্যে বেঁচে থাকা পরিযায়ী শ্রমিকদের খবর আসছে, আসছে দুর্ঘটনার খবর; তখন এই দুঃসময়েও এমন কিছু মানুষ আছেন যাঁদের মধ্যে মানবিকতার আলোটা পুরোপুরি নিভে যায়নি। এমন মানুষ সত্যিই আগামী দিনের অনুপ্রেরণা হয়ে থেকে যান।