বিশ্বায়নের যুগে নিজের সংস্কৃতিকে ভুলতে বসেছি আমরা সবাই। সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে হোক কিংবা স্ট্যাটাস মেনটেন, বহু বাবা মা-ই আজকাল বাংলা মিডিয়ামে নিজের সন্তানকে আর ভর্তি করান না। কলকাতার বুকে বাংলা ভাষার অবস্থা যখন এই, তখন সংস্কৃতের কথা তো বলাই বাহুল্য! কিন্তু সব কিছুরই তো একটা ব্যতিক্রম থাকে। এক্ষেত্রেও হয়েছে সেটাই।
দেবনাগরী ভাষাকে হৃদয়ে আকড়ে এখনও বেঁচে রয়েছে আস্ত দুটি গ্রাম। নাম মাত্তুর ও হোসাল্লি। কর্নাটকের তুঙ্গ নদীর তীরে অবস্থিত এই দুই গ্রামে কথোপকথন চলে এখনও সংস্কৃততেই। একসময় দ্রাবিড় অধ্যুষিত এই গ্রামে আজও শিশুদের হাতেখড়ি হয় সংস্কৃতিতেই। ক্রিকেট ফুটবলের কমেন্ট্রিও হয় দেবভাষাতেই। কন্নড়, তেলেগু, তামিল ভাষার অনুপ্রবেশ ঘটলেও প্রত্যেক গ্রামবাসীই সংস্কৃত ব্যাকরণের ধাতুরূপ, শব্দরূপ মেনেই উচ্চারণ করেন। ইতিহাস, ভূগোলের মত মূল বিষয়ের পাশাপাশি ছোট শিশুদের পাঠ্য তালিকায় থাকে বেদ, উপনিষদও।
তবে কেবল গ্রামবাসীদের একার কৃতিত্বে এসব সম্ভব হয়নি। প্রাচীন এই ভাষাকে বিলুপ্ত হওয়া থেকে বাঁচাতে উদ্যোগ নিয়েছে 'সংস্কার ভারতী' নামে এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। প্রতিদিন এখানে প্রায় ৫,০০০ শিশু সংস্কৃত শেখে।
শুধু এই দুটি গ্রামই নয়, ভারতের বহু গ্রামেই আজও সংস্কৃতে কথোপকথন বিদ্যমান। মধ্যপ্রদেশের ঝিরি ও মোহার গ্রাম, ওড়িশার সাসানা, রাজস্থানের গানোরা প্রভৃতি গ্রামের মানুষেরা আজও সংস্কৃততে সাবলীল।