তিরিশের দশকের শেষ দিকের ঘটনা। ওড়িশায় এগারো বছরের একটি মেয়েকে স্কুল থেকে বিতাড়িত করা হয়। কারণ? তৎকালীন ব্রিটিশ শাসকদের বিরুদ্ধে সে আওয়াজ তুলেছিল। যোগ দিয়েছিল স্বাধীনতার আন্দোলনে। সেটাই ছিল তাঁর ‘অপরাধ’।
কিন্তু সেই মেয়েটির, অর্থাৎ পার্বতী গিরি-র গল্প এখানেই শেষ হয়নি। পরিবারের অনেকেই স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সেই পরিবারেরই মেয়ে পার্বতী ছোট বয়স থেকেই বিভিন্ন সভা-সমিতিতে যোগ দেওয়া আরম্ভ করেন। মহাত্মা গান্ধীর অহিংসার নীতিতে বিশ্বাসী ছিলেন তিনি। আস্তে আস্তে গ্রামগুলিতে সেই মতাদর্শ ছড়ানোর কাজে অংশ নেন পার্বতী। স্বাধীনতা আন্দোলনের পাশাপাশি চলে গ্রামবাসীদের খাদির কাপড় বোনার প্রশিক্ষণের কাজও। ১৯৯৫ সালের ১৬ আগস্ট, তাঁর মৃত্যুর আগে পর্যন্তও তিনি ভারতের গ্রামের দরিদ্র মানুষদের সার্বিক উন্নয়নের কথা ভেবে গেছেন। এখনও, ওড়িশায় পার্বতী গিরি-কে ‘পশ্চিম ওড়িশার মাদার টেরেসা’ বলে সম্বোধন করা হয়।
২০১৭ সালে ওড়িশা সরকার তাঁর নামে একটি বিশেষ স্কিমের উদ্বোধন করেছিলেন। এগারো বছরের মেয়েটির কণ্ঠ একসময় সত্যের আদর্শে দীক্ষিত হয়ে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিল। পরবর্তীকালে গ্রামের মানুষগুলোর পাশে থাকার জন্য সেই কণ্ঠই অবলীলায় রাজ্যসভার সদস্য হওয়ার প্রস্তাব নাকচ করে। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে, কেমন অবিশ্বাস্য লাগে না কথাগুলো?