কখনও যদি বলা হয় তাজমহল বিক্রি করার কথা, আপনি ঠিক কী করবেন? তাজমহল না হলে রাষ্ট্রপতি ভবন, নিদেনপক্ষে লালকেল্লা, সংসদ ভবন? পাগলের প্রলাপ মনে হতেই পারে, কিন্তু একসময় এই সব কাজগুলোই করেছিলেন এক ব্যক্তি। শুধু ‘এইটুকু’তেই সীমাবদ্ধ ছিলেন না তিনি। ইনি আর কেউ নন, মিঃ নটবরলাল, ভারতের সর্বকালের সেরা ‘ছদ্মবেশী’।
বিহারের বাংরা জেলায় জন্মেছিলেন নটবরলাল। অবশ্য আসল নাম ছিল মিথিলেশ কুমার শ্রীবাস্তব। প্রথম জীবনে একজন উকিল ছিলেন ইনি। কিন্তু তাতেই ‘সন্তুষ্ট’ হচ্ছিলেন না। আস্তে আস্তে চলে এলেন টাকা প্রতারণার জগতে। অসম্ভব বুদ্ধি এবং চতুরতার জন্য খ্যাত ছিলেন এই নটবরলাল। সেই সঙ্গে খ্যাত ছিলেন ছদ্মবেশ ধারণে। ৫০টিরও বেশি ছদ্মবেশ ধারণ করেছিলেন নটবরলাল! আর শুধু ছদ্মবেশ নয়, সই জাল করার ব্যাপারেও তিনি ছিলেন জিনিয়াস। তবে এহেন ব্যক্তি ছোটখাটো কিছুতে বিশ্বাসী ছিলেন না। আমার-আপনার সই নয়, বিখ্যাত সব লোকেদের সই জাল করেছিলেন তিনি। আর সেইসব ব্যবহার করেই ঐতিহাসিক জায়গাগুলি বেচতে শুরু করেন নটবরলাল। তাজমহল, লালকেল্লা, মায় সংসদ ভবনটিও বেচে দিয়েছিলেন এই মানুষটি!
টাটা, বিড়লাদের ঘোল খাওয়ানো এই মানুষটির পিছনে যে পুলিশ দৌড়বে, সেটাই তো স্বাভাবিক। ১০০টিরও বেশি কেস ফাইল হয়েছে তাঁর নামে, ভারতের ৮টা রাজ্যের পুলিশ তাঁর খোঁজে হয়রান। মোট নয়বার আটকও হয়েছিলেন নটবরলাল। কিন্তু প্রত্যেকবারেই পালিয়ে এসেছিলেন তিনি, কেউ ধরতেও পারেনি। শেষবারটি ছিল ১৯৯৬ সালে, শরীর অসুস্থ বলে কানপুর জেল থেকে দিল্লি এইমসের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়ার সময় তিনি বেপাত্তা হয়ে যান। প্রসঙ্গত, তখন তাঁর বয়স ৮৪! নিজের মৃত্যু নিয়েও ধন্দে রেখে গেছেন নটবরলাল। অবশ্য গা ঢাকা দিতে যিনি এত পারদর্শী, তাঁর পক্ষে তো এ আর কিছুই নয়!