সমলিঙ্গ বিবাহকে (Same Sex Marriage) ইতিমধ্যে স্বীকৃতি দিয়েছে পশ্চিম ইউরোপের বহু দেশ। এবার সেই তালিকায় নাম লেখাল সুইৎজারল্যান্ডও (Switzerland)। কেন্দ্রীয় কাউন্সিলে এই নিয়ে আইন পাশ হয়ে গিয়েছিল আগেই। কিন্তু কিছু অংশের বিরোধিতার জন্য আটকে ছিল সমস্ত প্রক্রিয়া। তাই শেষ পর্যন্ত জনতার দরবারেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার দেওয়া হল। আর গতকাল গণভোটের ফলাফলে দেশের ২৬টি ক্যান্টনের বাসিন্দারাই একযোগে এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। ৬৪ শতাংশের বেশি মানুষ ভোট দিয়েছেন সমলিঙ্গ বিবাহের পক্ষে।
ইউরোপের অন্যতম রক্ষণশীল দেশ হিসাবে পরিচিত সুইৎজারল্যান্ড। বিশেষ করে লিঙ্গসাম্যের প্রশ্নে বরাবরই সমালোচনার স্বীকার দেশটি। ১৯৭১ সালের আগে পর্যন্ত দেশের কোথাও কোনো নির্বাচনে মহিলাদের ভোট দেওয়ার অধিকার ছিল না। এমনকি ১৯৯০ সাল পর্যন্ত বেশ কিছু ক্যান্টনে পুরসভা স্তরের নির্বাচনে মহিলারা ভোটাধিকার পেতেন না। তবে সেখানেও একুশ শতকের গোড়াতেই আছড়ে পড়ে এলজিবিটিকিউ আন্দোলনের ঢেউ। একদিকে এই নিয়ে সচেতনতা গড়ে তোলার কাজও যেমন এগোতে থাকে, অন্যদিকে রুখে দাঁড়ান রক্ষণশীল মানুষরাও।
২০০৭ সালেই সমকামিতাকে আইনি স্বীকৃতি দেয় সুইৎজারল্যান্ড সরকার। এমনকি সমকামী দম্পতির সহবাসের অধিকারও দেওয়া হয়। কিন্তু তাঁদের আইনি বিবাহের কোনো রাস্তা ছিল না এতদিন। আর তাই সন্তান প্রতিপালন থেকে শুরু করে নানা ধরনের প্রশাসনিক এবং অর্থনৈতিক নীতিতে বঞ্চিত ছিলেন তাঁরা। আর এই সমস্ত দাবিতেই দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষরা। শেষ পর্যন্ত গতবছর ফেডারাল কাউন্সিলে সমলিঙ্গ বিবাহকে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি ওঠে। নির্বাচিত প্রতিনিধিদের ভোটেও সেই দাবি পাশ হয়ে যায়। তবে বিরোধীদের সঙ্গে ভোটের পার্থক্য ছিল সামান্যই। আর তাই গণভোটের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় শেষ পর্যন্ত।
এই গণভোটকে ঘিরে বিগত কয়েক মাস ধরেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল সুইৎজারল্যান্ডের পরিস্থিতি। দুপক্ষের মধ্যে বেশকিছু ছোটোখাটো সংঘর্ষের খবরও আসে। এক পক্ষ অন্য পক্ষের পোস্টার ছিঁড়ে দিয়েছে, এমন অভিযোগও ওঠে একাধিকবার। তবে শেষ পর্যন্ত মানুষের রায়ে স্বীকৃতি পেল সমলিঙ্গ বিবাহ। এখন শুধু প্রশাসনিক কিছু কাজ বাকি।
আরও পড়ুন
সমলিঙ্গ দম্পতিদের ক্ষতিপূরণের নির্দেশ জাপানের আদালতে
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
সমলিঙ্গ বিবাহকে আইনি স্বীকৃতি দিতে নারাজ কেন্দ্র, কী বলছেন বাংলার বিশিষ্টজনেরা?