ক্ষমতায় ফিরলেন সুইডেনের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী ম্যাগডালেনা

মাত্র চার দিন আগের কথা। সুইডেনের (Sweden) প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিয়েছিলেন ম্যাগডালেনা অ্যান্ডারসন (Magdalena Andersson)। তৈরি করেছিলেন এক নতুন ইতিহাস। কিন্তু তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান তিনি। বলা ভালো, সরে দাঁড়াতে বাধ্য হন। গোটা বিশ্বজুড়েই সাড়া পড়ে গিয়েছিল সুইডেনের এই রাজনৈতিক টালবাহানা নিয়ে। শেষ পর্যন্ত ইতি পড়ল সেই অস্থিরতায়। আস্থাভোটে ফের ক্ষমতায় আসলেন ম্যাগডালেনা।

কিন্তু কী কারণে তৈরি হয়েছিল এই রাজনৈতিক জটিলতা? কেনই বা পুনরায় আস্থাভোটের পথে হাঁটল সুইডেন? আসলে, সদ্য শেষ হওয়া নির্বাচনে সুইডেনের কোনো রাজনৈতিক দলই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে ব্যর্থ হয়। ফলত, জোটের পথেই গড়িয়েছিল রাইখসড্যাগ। সেই সমীকরণ অনুযায়ী গ্রিন পার্টির সমর্থনে প্রধানমন্ত্রীর পদ পেয়েছিলেন ম্যাগডালেনা। তবে মন্ত্রিসভায় তাঁর পেশ করা বাজেটেই সূত্রপাত হয় বিতর্কের। অতি-দক্ষিণপন্থী ডেমোক্র্যাট দল এবং শরণার্থী বিরোধী শিবিরের সঙ্গে আলোচনা করায়, ম্যাগডালেনার থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নেয় গ্রিন পার্টি। 

অবশ্য তারপরেও অতি-দক্ষিণপন্থী দলের সঙ্গে জোট বেঁধে ক্ষমতায় থেকে যাওয়ার সুযোগ ছিল তাঁর কাছে। গ্রিন পার্টিও শর্ত দিয়েছিল, অতি-দক্ষিণপন্থীদের সঙ্গে সমঝোতা না করলে পুনরায় ভোটে সমর্থন জানাবে তারা। তবে রাজনৈতিক সৌজন্য এবং মতাদর্শের কারণে সেই পথে হাঁটেননি ম্যাগডালেনা অ্যান্ডারসন। বিকল্প হিসাবে মন্ত্রিসভায় উঠে এসেছিল আস্থাভোটের প্রস্তাব। 

সোমবার সুইডেনে আয়োজিত সেই আস্থাভোটেই সংকীর্ণ ব্যবধানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পান সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতা ম্যাগডালেনা। রাইখসড্যাগের ৩৭৫ সাংসদের মধ্যে তাঁর পক্ষে ভোট দিয়েছেন ১০১ জন। বিরোধিতা জানিয়েছেন ১৭৩ জন। অন্যদিকে ৭৫ জন সাংসদ বিরত ছিলেন মতামত জানাতে। সুইডেনের মন্ত্রিসভার নিয়মানুযায়ী, বিরোধী ভোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলেই ক্ষমতায় আসেন নতুন প্রধানমন্ত্রী। আর সেই হিসাবেই নতুন করে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিলেন ম্যাগডালেনা। আগামী বছরের সেপ্টেম্বরে পুনর্নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত একদলীয় সরকারের নেতৃত্ব দেবেন তিনি। 

১৯৯৬ সালে রাজনীতির ময়দানে আত্মপ্রকাশ হয়েছিল সুইডেনের প্রাক্তন সুইমিং চ্যাম্পিয়ন ম্যাগডালেনার। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী গোরান পারসনের প্রধান রাজনৈতিক উপদেষ্টা হিসাবে মন্ত্রিসভায় অভিষেক হয় তাঁর। ৫৪ বছর বয়সী ম্যাগডালেনা অর্থনীতিবিদও বটে। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে দীর্ঘ সাত বছর দেশের অর্থনীতিও সামলেছেন তিনি। এবার দেখার, নতুন চরিত্রে তাঁর আগমন কতটা বদলে দিতে পারে নর্ডিক দেশটির পরিস্থিতি…

Powered by Froala Editor