একটি শিশুপাঠ্য গল্পে ছিল একদল ছেলের কথা, যারা পুকুরপাড়ে দাঁড়িয়ে ব্যাং লক্ষ্য করে ঢিল ছুঁড়ত। একদিন সেই পুকুর থেকে একটি বৃদ্ধ ব্যাং উঠে এসে ভারী জব্দ করেছিল তাদের। কিন্তু সেটা তো গল্প। বাস্তবের চেহারাটা এমন পোয়েটিক জাস্টিস দেয় না। তাই ম্যানচেস্টার ক্যানেলের নিঃসঙ্গ মা রাজহাঁস মনের দুঃখে শেষে মৃত্যুর মুখেই ঢলে পড়ল।
ঘটনাটি ঘটেছে জার্মানির কিয়ার্সলে শহরের ম্যানচেস্টার ক্যানেলে। ২০ জুন সেখানে একদল তরুণ-তরুণী আনন্দ করতে গিয়েছিল। আর তাদের সেই আনন্দের শিকার হল পৃথিবীর আলো না দেখা তিনটি রাজহাঁস। তারা তখনও ডিমের ভিতর থেকে জন্মই নেয়নি। তরুণ-তরুণী সেই ডিম লক্ষ্য করে ঢিল ছুঁড়তে থাকলে তিনটি ডিম নষ্ট হয়ে যায়। বাকি দুটি ডিম নষ্ট হয়েছে আগেই। পড়ে থাকল কেবল একটি ডিম। আর এই পরিস্থিতিতে ভিতরে ভিতরে ভীষণ ভেঙে পড়ে মা রাজহাঁস।
সপ্তাহ দুয়েক আগেই বিদায় নিয়েছে তার পুরুষ সঙ্গীটি। সে কোথায়, জানে না কেউ। বেঁচে থাকার একমাত্র সম্বল ছিল কয়েকটি ডিম। এর ভিতর থেকেই জন্ম নেবে তার সন্তান। কিন্তু সেই সম্ভবনাও যখন নষ্ট হয়ে গেল, তখন বেঁচে থাকার আশাই ত্যাগ করল মা রাজহাঁস। পরদিন সকালে তার নিথর দেহ খুঁজে পেল খালের কর্মীরা।
এই ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করেছেন বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কর্মী সাম উড্রো। তাঁর বর্ণনা পরে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন নেটিজেনদের এক অংশ। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে নড়েচড়ে বসেছে জার্মানি প্রশাসন। দোষীদের শাস্তির দাবিও উঠেছে। কিন্তু এসব করেও কি মানুষের নিষ্ঠুর মনোবৃত্তির হাত থেকে বাঁচানো যাবে অসহায় প্রাণীদের? মানুষের মতোই তাদেরও যে জীবন আছে, আছে মানবিক অনুভূতি; সেকথা কি আদৌ মনে রাখবে মানুষ?
Powered by Froala Editor