ছোট্ট আলিকে ঘিরে অনেক স্বপ্ন ছিল তার কোচ ঈশানের। একদিন আলি অনেক বড়ো ক্রিকেটার হবে। বাইশ গজ দাপিয়ে ব্যাট করবে। স্বপ্ন অবশ্য পূরণ হয়েছিল ঠিকই। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় দলের মুখোমুখি দাঁড়ানো সেই আলির আশেপাশে কোথাও সেদিন ছিলেন না ঈশান। ঈশানের শরীরটা ছিল না। মনটা ছিল, আত্মাটা ছিল। এভাবেই শেষ হয়েছিল 'কাই পো চে' সিনেমা। আর সেই একটা সিনেমাই যে এমন অক্ষরে অক্ষরে মিলে যাবে অভিনেতাদের জীবনের সঙ্গে, সেকথা আর কে ভাবতে পেরেছিলেন?
সেদিনের সেই বছর পনেরোর আলি আজ বড়ো হয়েছে। এই বছরের আইপিএলেই মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে আত্মপ্রকাশ করতে চলেছেন দিগ্বিজয় দেশমুখ। আর কোচ ঈশান? এই তো গত রবিবার পৃথিবীর সমস্ত মায়া কাটিয়ে বিদায় নিলেন সুশান্ত সিং রাজপুত। বাস্তবেও তাই দিগ্বিজয় দেশমুখের প্রথম বড়ো ম্যাচের দিন আশেপাশে কোথাও থাকবেন না সুশান্ত সিং।
সুশান্তের মৃত্যুর পর শোক প্রকাশ করেছেন অনেকেই। আর দিগ্বিজয় দেশমুখ যে সেই বছর আটেক আগের স্মৃতিতে ভেসে যাবেন, এটা তো স্বাভাবিক। আর সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয়, 'কাই পো চে'র শ্যুটিং শেষ হওয়ার পর থেকে একবারও সুশান্তের সঙ্গে দেখা হয়নি। আসলে সুশান্তকে তিনি কথা দিয়েছিলেন, যতদিন সফল ক্রিকেটার হয়ে না উঠবেন, ততদিন দেখা করবেন না। গত ডিসেম্বরেই আইপিএলের অকশনে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের জন্য মনোনীত হয়েছেন তিনি। এরপর ফোনে সুশান্তকে সেই খবর জানালেও, লকডাউনের কারণে সামনাসামনি দেখা করা সম্ভব হয়নি।
সুশান্তের মৃত্যুর পর এইসব কথাই বারবার মনে পড়ছে দিগ্বিজয়ের। মনে পড়ছে শ্যুটিং ফ্লোরে নামার আগে সুশান্ত তাঁকে বারবার শিখিয়ে দিতেন একটা শটের খুঁটিনাটি। আর বারবার মনে পড়ছে সেই প্রতিশ্রুতির কথা। এমনকি 'এম এস ধোনি' সিনেমার প্রমোশনের জন্য দিগ্বিজয়ের শহরেও গিয়েছিলেন সুশান্ত। কিন্তু দুজনের দেখা হয়নি। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দেখা করেননি দিগ্বিজয়। কিন্তু যেদিন দেখা করার সময় এল, সেদিন শুরু হল লকডাউন। আর লকডাউন শেষ হওয়ার আগেই বিদায় নিলেন সুশান্ত। দিগ্বিজয় যেন এখনও সেটা মেনে নিতে পারছেন না। আক্ষেপের সঙ্গে শুধু উত্তর খুঁজছেন, হঠাৎ কেন এমন সিদ্ধান্ত নিলেন সুশান্ত?
Powered by Froala Editor