আজ ছটপুজো, নিষেধাজ্ঞার পরেও কি রেহাই পাবে রবীন্দ্র-সুভাষ সরোবর?

রবীন্দ্রসরোবরে ছটপুজোর ব্যাপারে আগেই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল কলকাতা উচ্চ আদালত। তবে বিধিনিষেধ মেনে উৎসব পালনের জন্য আর্জি জানিয়েছিল কেএমডিএ। সেই আবেদনই খারিজ করে দেয় হাইকোর্ট এবং জাতীয় পরিবেশ আদালত। এবার দেশের সর্বোচ্চ আদালতও অনড় থাকল সেই সিদ্ধান্তেই।

পরিবেশ আদালত এবং কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের সংশোধনের জন্য সুপ্রিম কোর্টের কাছে দ্বারস্থ হয়েছিল কলকাতা পুরসভা। শুনানির দিন ঠিক হয়েছিল ১৬ নভেম্বর। তবে তিন বিচারপতির বেঞ্চ অনুপস্থিত থাকায়, এক সপ্তাহ পিছিয়ে হয় বিচারের তারিখ। কিন্তু ২০ তারিখই ছটপুজো। জরুরি ভিত্তিতেই তাই গতকাল শুনানি হয় সর্বোচ্চ আদালত। তিন বিচারপতির বেঞ্চ সেখানে সম্মতি জানায় উচ্চ আদালতের রায়কেই। জানিয়ে দেয় রবীন্দ্রসরোবর ও সুভাষ সরোবরে এই বছর কোনো ছটপুজো করা যাবে না।

তবে প্রাথমিকভাবে উচ্চ আদালতের রায়কে বিরোধিতা করলেও এদিন সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। জানান, রবীন্দ্রসরোবরের বিকল্প হিসাবেই একাধিক ব্যবস্থা নিয়ে রেখেছে প্রশাসন। তৈরি করা হয়েছে ৪৮টি কৃত্রিম জলাশয় ও ঘাট। তাছাড়া শহরের আরও ১৬টি জলাশয়ে ৪৪টি অস্থায়ী ঘাট তৈরি করেছে কেএমডিএ। গঙ্গার তীরেও গড়ে তোলা হয়েছে ৪০টি অস্থায়ী ঘাট।

দূষণ ও করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে পুলিশ প্রশাসনকে। কিন্তু তারপরেও কি শেষ অবধি পালিত হবে আদালতের রায়? সে ব্যাপারে যথেষ্ট সন্দিহান পরিবেশকর্মীরা। মাধবপুর পরিবেশ চেতনা সমিতির সম্পাদিকা জয়িতা কুণ্ডু জানান, “নিঃসন্দেহে সুপ্রিম কোর্টের এই রায় ইতিবাচক একটি দিক। কিন্তু কালীপুজোতেও আদালতের রায়কে বুড়ো আঙুল দেখিয়েই দৌরাত্ম্য চলল বাজির। এক্ষেত্রেও হতে পারে তেমনটা। আসলে যতক্ষণ মানুষ না সচেতন হচ্ছে আইন দিয়ে বদলানো যাবে না এই প্রবৃত্তি”।

কালীপুজোরও বেশ কিছুদিন আগে থেকেই একাধিক জায়গায় সচেতনতামূলক প্রচার চালিয়েছে মাধবপুর পরিবেশ চেতনা সমিতি। কিন্তু কতোটা তারপরেও কি পরিবর্তিত হবে মানুষের মানসিকতা? এই কর্মকাণ্ডের পরেও অপ্রত্যাশিত ফলাফল নিয়েই আশঙ্কিত জয়িতা দেবী। তাঁর কথায়, “গতবছরও নিষেধ থাকা সত্ত্বেও পুলিশের উপস্থিতিতেই তালা ভেঙে রবীন্দ্র সরোবরে ঢুকে পড়েছিল মানুষ। অনেক চেষ্টা করেও আটকানো যায়নি দূষণকে। কাজেই মানুষকেই পরিবেশের প্রতি দায়িত্বশীল হতে শিখতে হবে, তবেই সুরাহা মিলবে দূষণ থেকে। শুধু ছটপুজোই নয় যে কোনো উৎসবেই আনন্দ করতে গিয়ে যাবে পরিবেশের ক্ষতি না হয়ে, সেটা দেখা উচিত আমাদেরই।”

তবে এসবের মধ্যেই আজ শহরে উদযাপিত হবে ছটপুজো। প্রশাসনের পাশাপাশি পরিবেশ কর্মীদের কাছেও হঠাৎ দূষণবৃদ্ধি প্রতিরোধই এখন সবথেকে বড়ো চ্যালেঞ্জ। জীববৈচিত্রে সমৃদ্ধ কলকাতার অন্যতম জলাশয়গুলি শেষ অবধি রক্ষা পায় কিনা, সেই উত্তর দেবে কেবল সময়ই...

আরও পড়ুন
কৈলাসে ফেরার পথে উত্তরবঙ্গে থামেন দুর্গা, দশমী থেকেই শুরু নতুন পুজো

Powered by Froala Editor

More From Author See More