দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারের পরিসর যত বাড়ছে, মানুষ ক্রমশ ঝুঁকছেন অনলাইন মিডিয়ার দিকেই। আর এই কোভিড পরিস্থিতি সেই পরিসরটা আরও প্রসারিত করেছে। সারা দেশে এখন অনলাইন স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম এবং অনলাইন নিউজ পোর্টালের সংখ্যা গুনে শেষ করা যাবে না। এতে যেমন সিরিজ-সিনেমা থেকে নানা ধরনের খবর অতি সহজে মানুষের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে, তেমনই ভুয়ো সংবাদ প্রচারের অভিযোগও নতুন নয়। আর অনলাইন স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মগুলিতে ক্রমাগত চটুল দৃশ্য পরিবেষণের অভিযোগ তো আছেই। যেহেতু এখানে সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিল না, তাই এভাবে যথেচ্ছ প্রচার সম্ভব হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। আর সম্প্রতি একটি মামলার রায়ে তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রককে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট।
গতবছর এই বিষয়ে মামলা শুরু হয় সুপ্রিম কোর্টে। তখন অবশ্য কেন্দ্র সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলিকে নিয়ে এখনই চিন্তার কিছু নেই। অবশ্য এর মধ্যেই একের পর এক অভিযোগ আসতে থাকে, নানা সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের স্বার্থে ভুয়ো খবর সম্প্রচার করছে বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল। আর স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মে যেধরনের চটুল দৃশ্য সম্প্রচার করা হচ্ছে, তা কোনো সিনেমা বা সিরিয়ালে ব্যবহার করা হলে নিঃসন্দেহে সেন্সর বোর্ডের কোপে পড়ত। সব দিক বিবেচনা করেই তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রককে একটি পৃথক সংস্থা তৈরির কথা জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। আর সোমবার এই রায় প্রকাশের পর সে-বিষয়ে কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে।
তবে সরকারি পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি কি এখানেও সরকারি নজরদারি শুরু হবে? গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ কি আবারও রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণের কোপে পড়তে চলেছে? এমন প্রশ্নও তুলছেন অনেকে। যদিও তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে শুধু কিছু গাইডলাইন তৈরি করে দেওয়া হবে। মিডিয়ার স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করার কোনো উদ্দেশ্য এর মধ্যে নেই। সব মিলিয়ে যদি মানুষের কাছে আরও বেশি বেশি করে প্রকৃত সংবাদ পৌঁছতে পারে, তাহলে তার থেকে খুশির খবর আর কিছুই হবে না।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
ডিজিটাল মিডিয়া নিয়ন্ত্রণের আর্জি কেন্দ্রের, অপপ্রচার আটকানোর আড়ালে কি বিরোধীদের কণ্ঠরোধ?