চাঁদের জন্ম কীভাবে? প্রচলিত ধারণা বদলে দিল সুপার কম্পিউটার

অবশেষে প্রযুক্তির সাহায্যেই হল যবনিকা পতন। চাঁদের জন্মরহস্য উদ্ঘাটন করল সুপার কম্পিউটার। সম্প্রতি ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা সুপার কম্পিউটারে একাধিক সম্ভাবনার সিমুলেশন প্রস্তুত করে দেখালেন কীভাবে সৃষ্টি হয়েছিল পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ।

যদিও এর আগে থেকেই অধিকাংশ জ্যোতির্বিদদের অভিমতই ছিল এমনটা। আজ থেকে প্রায় সাড়ে চারশো কোটি বছর আগে থিয়া নামের একটি গ্রহের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় পৃথিবীর। তাত্ত্বিকভাবে ধরে নেওয়া হত তার আয়তন ছিল মঙ্গল গ্রহের থেকে খানিকটা ছোটো। থিয়ার গতিবেগ এবং ঘূর্ণনের কারণেই পৃথিবী থেকে একটি অংশ ছিটকে বেরিয়ে আসে বাইরে। তারপর পৃথিবীর মহাকর্ষ বলের প্রভাবে তা প্রদক্ষিণ করতে থাকে পৃথিবীকে।

ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক গবেষণা এই তত্ত্বকে সমর্থন করলেও, তার বেশ কিছু অংশে পরিবর্তন করে। এই গবেষণায় নিযুক্ত বিজ্ঞানীরা শূন্য ঘূর্ণন হার থেকে অত্যন্ত দ্রুত ঘূর্ণাবর্তের সম্ভাব্য শর্তকে সিমুলেশনে উপস্থাপিত করেন। আর তাতেই পরিষ্কার হয়ে যায় আসল ছবি। সুপার কম্পিউটার জানান দেয়, থিয়া যদি সামান্যতমও ঘূর্ণায়মান হত, তবে একটি নয় পৃথিবীর আকাশে আজ দেখা যেত দু’-দুটি চাঁদ। 


তবে জন্মলগ্নে চাঁদের ভর ছিল বর্তমান ভরের ৮০ শতাংশ। ক্রমে বিভিন্ন উল্কা এবং ধূমকেতুর সঙ্গে সংঘর্ষ হতে হতে ভর বাড়ে চাঁদের। পাশাপাশি পৃথিবী আর চাঁদের দূরত্ব আরও কম ছিল বলেই জানাচ্ছেন গবেষকরা। ধীরে ধীরে ভর বাড়ার কারণে মহাকর্ষ বলের প্রভাবে দূরে সরে যায় পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ। 

তবে শুধু চাঁদের সৃষ্টিই নয়, সুপার কম্পিউটার সিমুলেশন থেকে জানা গেছে চাঁদের রাসায়নিক গঠনের রহস্যও। থিয়ার সঙ্গে পৃথিবীর ধাক্কার সময় লোহার মতো ভারী মৌলগুলির অধিকাংশই থেকে যায় পৃথিবীতে। যার কারণে মাত্র ১ শতাংশ লোহা রয়েছে চাঁদের কেন্দ্রে। অন্যদিকে হাইড্রোজেন, অক্সিজেনের মতো হালকা মৌলগুলি, চাঁদের ছিটকে যাওয়ার সময় প্রচণ্ড তাপমাত্রায় ছড়িয়ে পড়ে মহাকাশে। কাজেই কোনো বায়ুমণ্ডলের অস্তিত্ব নেই সেখানে। সম্প্রতি এই গবেষণা প্রকাশিত হয় রয়্যাল অ্যাসট্রোনমিক্যাল সোসাইটির মাসিক পত্রিকায়...

আরও পড়ুন
চাঁদের বুকে ১ লক্ষ নতুন গহ্বর খুঁজে পেল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, চাঞ্চল্য বিজ্ঞানীমহলে

Powered by Froala Editor