আকাশে ‘সুপার পিঙ্ক মুন’ আজ, নজর থাকুক সন্ধে থেকে ভোর অব্দি

দীর্ঘদিন ধরে গৃহবন্দি থেকে আমরা অনেকেই হাঁপিয়ে উঠেছি। করোনা ভাইরাসের দাপটে সামাজিক মেলামেশার অনেক পরিসরই এখন বন্ধ। তাই এক অদ্ভুত একাকিত্ব গ্রাস করেছে সকলকেই। চলুন, এই সময় একটু আকাশের দিকে তাকিয়ে চাঁদ দেখা যাক। আজ, ৭ এপ্রিল, অবশ্যই ছাদে উঠে বা জানলা দিয়ে চাঁদের দিকে তাকাবেন। তাহলে এক বিরল মহাজাগতিক দৃশ্যের সাক্ষী থাকবেন আপনিও। বিজ্ঞানের ভাষায় যাকে বলে 'পেরিগিয়াল ফুল মুন', আর সাধারণ মানুষ বলে 'সুপার মুন'।

চাঁদ তার উপবৃত্তাকার কক্ষপথে পৃথিবীর চারদিকে ঘুরতে ঘুরতে যখন খুব কাছে চলে আসে, তখন তাকে বলে পেরিগি। আর অনেকটা দূরে চলে গেলে বলা হয় অ্যাপোগি। আর পেরিগির সময় যদি হয় পূর্ণিমা, তাহলে যে অদ্ভুত মায়াঘেরা জ্যোৎস্নার সৃষ্টি হয় তা মনে রাখার মতো। তবে এমন ঘটনা সচরাচর ঘটে না। আজ সন্ধেয় সেই ঘটনাই ঘটতে চলেছে। অর্থাৎ 'সুপার মুন'।

বিকেলের পর আকাশে চাঁদকে অন্যদিনের থেকে অন্তত ১০ শতাংশ বড়ো দেখাবে। উজ্জ্বলতাও অন্যদিনের থেকে ৩০ শতাংশ বেশি হবে। তাছাড়া দূরে থাকার জন্য মহাজাগতিক ধূলিকণার জন্য জ্যোৎস্নায় যে রঙিন ম্লানভাব থাকে, সেটাও থাকবে না আকাশে।

অনেকে এই পূর্ণিমার একটি ডাকনামও দিয়েছেন, 'পিঙ্ক সুপার মুন'। তবে চাঁদের রং গোলাপি হবে, এমন মনে করার কিন্তু কোনো কারণ নেই। বছরের প্রত্যেকটা পূর্ণিমার এমন ডাকনাম থাকে। আর এপ্রিল মাসে ফুটে ওঠে ফ্লক্স সাবুলতা বা পিঙ্ক ফ্লক্স, সেই কারণেই এই নাম। তবে গোলাপি না হলেও, ঝকঝকে সাদা চাঁদ দেখতে পাওয়াও বিরল বৈকি! সব মিলিয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যে থেকে সারারাত আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতে খুব খারাপ লাগবে না। শুধু আক্ষেপের বিষয়, ভারতে যখন সন্ধে, তখনও চাঁদের পূর্ণিমা তিথি শুরু হবে না। পূর্ণিমা শুরু হতে হতে এদেশে তখন ভোরের সূর্য উঠে যাবে। ফলে সম্পূর্ণ গোলাকার আর উজ্জ্বল চাঁদ আমরা দেখতে পাব না। কিন্তু চাঁদকে এত কাছ থেকে দেখার সুযোগও তো সচরাচর হয় না।

পৃথিবীর সমস্ত মানুষের একাকিত্বের অনুভূতি কি প্রকৃতিকেও স্পর্শ করে গিয়েছে? তাই এই বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক আর লকডাউনের মাঝে সেই একাকিত্বের সঙ্গী হয়ে নেমে আসছে চাঁদ? বিজ্ঞানীরা অবশ্য এমন কল্পনায় তাচ্ছিল্যের হাসি হাসছেন। তাঁদের দাবি, এমনটা তো হওয়ারই ছিল। কিন্তু কল্পনায় এটাকে নিছক সমাপতন মনে করতে না চাইলে তেমন একটা ক্ষতি নেই। তাছাড়া, আমাদের ব্যস্ত জীবনে তো অনেক বিরল মহাজাগতিক দৃশ্য প্রত্যক্ষ করার সময় বা সুযোগ ঘটে না। এক্ষেত্রে কিন্তু দুটোই আছে। আর এই দৃশ্যের সাক্ষী থাকার উপরি কারণ তো আছেই!