সুন্দরবন। পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণের এই সবুজ ভূখণ্ড আমাদের অনেকেরই প্রিয়। বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য বজায় রাখতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এই অঞ্চল। কিন্তু ‘রক্ষাকর্তা’ হিসেবেও এর ভূমিকা নিতান্ত কম নয়। সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভের জন্যেই বুলবুলের ভয়ঙ্কর দাপট থেকে অনেকাংশে রক্ষা পেল দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা-সহ রাজ্যের অন্যান্য এলাকা।
সমুদ্র থেকে ঝড় উঠে আসার সময়, বুলবুল তার পূর্ব নির্ধারিত গতিপথ ধরে এগোলে আছড়ে পড়তে পারত কলকাতায়। কিন্তু সুন্দরবনে বাধা পেয়েই সেই ঝড় পাল্টেছে গতিমুখ। সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ অরণ্য বুক চিতিয়ে আটকেছে বুলবুলের দাপট। ফলে, তীব্রতাও কমেছে অনেকটাই। সুন্দরবনের যে-অঞ্চলে ম্যানগ্রোভ নেই, সেখানেই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি।
শনিবার রাতে শহর কলকাতার সবচেয়ে কাছাকাছি অবস্থান করছিল এই ঘুর্ণিঝড়। কিন্তু খুব বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়নি শহরের। উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনাতেও অনেকটাই ক্ষয় হয়েছিল শক্তির। সুন্দরবনের ‘প্রহরী’ না থাকলে কী হত, সে-আশঙ্কায় শিউরে উঠছেন বিশেষজ্ঞরা।
অনেকেরই মনে পড়ছে বছর দশেক আগের কথা। সুন্দরবনের সুন্দরী-হেতাল-গেঁওয়া-গরান গাছেরাই সেবার আয়লার ধ্বংসলীলা থেকে বাঁচিয়েছিল কলকাতাকে। এবারও পুনরাবৃত্তি হল তার। এরপরও বৃক্ষনিধন, পরিবেশের হত্যা চলবে? মানুষ কি কৃতজ্ঞ হবে না এরপরও?