২০১৩ সালের কথা। সুন্দরবনের অন্তর্গত বসিরহাট রেঞ্জের কাঠুয়াঝুরি ডিভিশনে নিয়মমাফিক টহল দিচ্ছিলেন ৩৫ বছর বয়সী বনকর্মী সঞ্জয় শীল। এমন সময়ই ঘটে যায় একটি দুর্ঘটনা। আচমকাই ঝলসে উঠে এক সহকর্মীর বন্দুক। আর সেই গুলিতে বিদ্ধ হন সঞ্জয়। অস্ত্রোপচারে প্রাণ বাঁচানো গেলেও, বাদ দিতে হয় তাঁর বাঁ পা। সেই ঘটনার আট বছর পর এবার পুনরায় চলচ্ছক্তি ফিরে পেলেন তিনি। নেপথ্যে প্রস্থেটিকস অঙ্গ।
এতদিন স্ক্র্যাচ এবং অস্থায়ী পা-এর ওপর ভরসা করেই চলাফেরা করতে হত তাঁকে। তবে গোটা প্রক্রিয়াটা ছিল বেশ কষ্টসাধ্য। সম্প্রতি অলাভজনক সংস্থা ‘শের’, কলকাতা রোটারি ক্লাব এবং বনবিভাগের যৌথ উদ্যোগে উন্নত মানের প্রস্থেটিকস অঙ্গ প্রতিস্থাপন করা হয় সঞ্জয়ের দেহে। যা আগের অস্থায়ী অঙ্গের থেকে কার্যকারিতা বহুগুণ বেশি বলেই মনে করছেন চিকিৎসকরা। তাঁরা আশাবাদী, নতুন এই অঙ্গের ব্যবহারে আবার স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাবেন সঞ্জয়।
দুর্ঘটনার পর ‘ফিল্ড ওয়ার্ক’ থেকে চিরকালের মতো ছুটি নিতে হয়েছিল তাঁকে। অনিচ্ছা সত্ত্বেও এক জায়গায় বসে অফিসের কাজ করতে হত সঞ্জয়কে। তবে প্রতিস্থাপিত প্রস্থেটিকস অঙ্গের দৌলতে আবার পুরনো ছন্দে ফিরতে পারবেন তিনি।
সঞ্জয়ের জন্য বিশেষভাবে প্রস্থেটিকস অঙ্গটি তৈরি করিয়ে আনা হয়েছে জার্মানি থেকে। অলিম্পিয়ান ও প্যারাঅলিম্পিয়ান অ্যাথলিট অস্কার পিস্তোরিয়াসের জন্যও কৃত্রিম অঙ্গ তৈরি করেছে সংশ্লিষ্ট এই জার্মান ফার্মটিই। কিংবদন্তি অ্যাথলিটকে ফিরিয়ে দিয়েছে নতুন জীবন। সঞ্জয়ের ক্ষেত্রেও একইভাবে কার্যকরী হবে এই অঙ্গ, তেমনটাই অভিমত চিকিৎসকদের। তবে শুধু কর্মক্ষমতাই নয়, অত্যাধুনিক এই চিকিৎসা মনোবলও বাড়িয়ে তুলেছে তরুণ বনকর্মীর। জীবনের চেনা ছন্দ ফিরে পেয়ে রীতিমতো উচ্ছ্বসিত সঞ্জয়। এখন শুধু এই নতুন অঙ্গের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে কর্মক্ষেত্রে ফেরার অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন তিনি…
আরও পড়ুন
সুন্দরবনে নতুন অঙ্গুরিমাল প্রাণী আবিষ্কার প্রেসিডেন্সির গবেষকদের
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
সাইকেলে চেপে সুন্দরবন, বাদাবনে বাঘের চাল দেখাবেন নাট্যকর্মীরাই