একটা বিরাট থালা উপচে পড়ছে বিরিয়ানিতে। হালকা ধোঁয়া উঠছে সেই বিরিয়ানি থেকে। পরিমাণ এতটাই, একা খেয়ে শেষ করা মুশকিল। সঙ্গে আবার মাটনের বড়ো-বড়ো টুকরো। মাথাপিছু প্রায় চারটে করে। কী, শুনেই লোভ লাগছে? সে লাগুক, খেয়ে শেষ করতে কিন্তু সমস্যা হতে পারে আপনার। আবার, স্বর্গীয় সেই স্বাদ উপেক্ষাও করা মুশকিল। বর্ণনা শুনে চিনতে পারছেন নিশ্চয়ই? হ্যাঁ, ঢাকার সুলতানের বিরিয়ানির কথাই বলছি।
আরও পড়ুন
দু-বাংলার সেতু হয়ে হাজির প্রহর, একুশে বইমেলার আড্ডায় জয়ী হল ভাষাই
গুলিয়ে ফেলবেন না। ঢাকার কোনো রাজা-মহারাজা বা সুলতানের কথা হচ্ছে না এখানে। হচ্ছে ‘সুলতান ডাইন’-এর কথা। বিরিয়ানির এমন রাজকীয় স্বাদ ও পরিবেশন অবশ্য যে-কোনো সুলতানের ডাইনিং রুমকেই মনে করিয়ে দেয়। ঢাকা শহরে মোট চারটি আউটলেট আছে সুলতান ডাইন-এর। তাদেরই একটি, গুলশানের আউটলেটে হাজির হয়েছিলাম আমরা।
আরও পড়ুন
গোয়ালন্দ ঘাট, পদ্মার স্টিমার ও এক ‘গোপন’ মুরগির রেসিপির গল্প
হাজির তো হওয়া গেল, কিন্তু এমন আপ্যায়ন! এমনিতেই বাংলাদেশের মানুষদের অতিথিপরায়ণতার কথা সবার মুখে-মুখে ফেরে। ব্যক্তিগত মোলাকাতে তার প্রমাণও পেয়েছি বারংবার। কিন্তু একটি রেস্টুরেন্টে এমন অভ্যর্থনা পেলে অবাক হতে হয় বইকি! একজন কর্মচারী আমাদের নিয়ে গেলেন বাহারি এক টেবিলে। বাহারি সজ্জা চারদিকে। আশেপাশের টেবিল থেকে ভেসে আসছে ভোজনরসিকদের কলকাকলি। চামচের টুংটাং। সব ছাপিয়ে, বিরিয়ানির গন্ধ। কাচ্চি বিরিয়ানি। ঢাকা স্পেশাল।
আরও পড়ুন
অসময়েও ইলিশের ঢল, ‘রুপোলি শস্যে’র স্বাদে মজেছে জীবনানন্দের বরিশাল
তবে, বিরিয়ানির আগে একগ্লাস ঠান্ডা বুরহানি খাওয়া কিন্তু আবশ্যিক। একগ্লাস ভর্তি টক-ঝাল-মিষ্টি ঠান্ডা সবুজ পানীয়, যেন আরও জাগাড় দিয়ে উঠবে খিদে। তারপর, রাজকীয় সেই বিরিয়ানি। সঙ্গে বিশাল বিশাল মাংসের টুকরো। হ্যাঁ, বিরিয়ানিতে আলু না পেলে যাদের মন ভেঙে যায়, হতাশ হবেন না তাঁরাও। রয়েছে নরম ও সুস্বাদু আলুর টুকরো। কাহারে করিব সেই স্বাদের বর্ণন!
আরও পড়ুন
প্রেমিকার চিঠির আদলে ‘নকশি কাঁথার মাঠ সাজিয়ে তুলেছেন বাঙালি কৃষক
আর, বিরিয়ানির শেষে একপ্লেট ‘জর্দা’। মিষ্টি এই পদটি মিহিদানা আর সীতাভোগের কম্বিনেশন। এও বাংলাদেশের নিজস্ব পদ। সুলতানি আভিজাত্য বোধহয় একেই বলে।
আরও পড়ুন
বিজয়ের আনন্দে মাতোয়ারা গোটা বাংলাদেশ, খুলনার তখনও লড়ছে স্বাধীনতার জন্য
এমন খানাপিনার পর যখন সুলতানের ডেরা থেকে বেরনো গেল, মনে হচ্ছিল, হাতে একটা গড়গড়ি থাকলে বেশ হত। মনের আর দোষ কী! এই অভিজ্ঞতার পর একটু আয়েস করতে সাধ তো হয়ই! তার ওপর, ঢাকার সুলতানের হেঁশেলের রান্না। একটু মৌজ না করলে চলে!