“সমুদ্রের কাছে গেলে ঢেউয়ের আঘাত আসবেই। কিন্তু তার ভয়ে পিছিয়ে যেও না। বিশ্বভ্রমণের ইচ্ছে হলেই বেরিয়ে পড়ো। সময়ের অপেক্ষা না করে।”
মায়ের এই ইচ্ছের কথাগুলিই বলছিলেন ৬৮ বছরের সুধা মহালিঙ্গম। শৈশবে পরিবারের সঙ্গে মহাবলীপূরমে বেড়াতে গিয়ে দেখেছিলেন বিভিন্ন দেশের যাযাবর মানুষ। তাদের দলে যোগ দেওয়ার ‘দুঃসাহস’ জেগে উঠেছিল তখনই। চেন্নাইতে বড় হয়েছেন সুধাদেবী। পৃথিবীর বন্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে চেয়েছিলেন ভীষণভাবে। চল্লিশ বছরে পৌঁছে সে সাধ পূর্ণ হয়। তার আগে অবধি তিনি সাংবাদিক।
১৯৯৬-এ কৈলাসের মানস সরোবরে ৩২ দিনের প্রথম অভিযান। বাড়িতে তখন ৫-৬ বছরের ছেলে। এরপর, গ্রেট ব্যারিয়ার রিফের রোমাঞ্চকর ডাইভিং, কাশ্মীরে অজানা সঙ্গীদের সঙ্গে দুষ্কৃতিদের ডেরা পারাপার, বোর্নিও রেইনফরেস্টের বিষাক্ত ছত্রাক ও কীটপতঙ্গের মধ্যে দুঃসাহসিক ট্রেকিং। সবক্ষেত্রেই পাশে দাঁড়িয়েছে তাঁর পরিবার। তাই পিঠে ব্যাগ চাপিয়ে পাসপোর্ট, ক্যামেরা, ট্রাইপড, নোটবুক নিয়ে বছরে প্রায় ৫-৬টি ট্যুরে বেরিয়ে পড়েন সুধা। বহু পত্রিকায় তিনি লিখেছেন তাঁর দু-দশকের রোমাঞ্চকর ভ্রমণকাহিনি।
পথ-চলায় বহু বিচিত্র মানুষ দেখেছেন। চুটিয়ে বেঁচেছেন সুধাদেবী। আজো বাঁচছেন। সুধাদেবীর জীবন-দর্শন প্রকৃতির সৌন্দর্যের কাছে ঝুঁকি তুচ্ছ। ফের বেরোচ্ছেন অভিযানে, এবারে গন্তব্য - সেপ্টেম্বরে মাদাগাস্কার এবং ডিসেম্বরে পাটাগোনিয়া।