সংবাদ সংস্থা রাষ্ট্রের পাহারাদার নয়, তীব্র প্রতিক্রিয়া মার্কিন জনগণের

সংবাদ সংস্থা রাষ্ট্রের পাহারাদার নয়, তার দায়িত্ব অনেকটাই বেশি। অন্তত আমেরিকার মানুষ তাই মনে করে। এমনটাই জানাচ্ছে মিডিয়া ইনসাইট প্রোজেক্টের রিপোর্ট। বিশেষ করে মার্কিন নির্বাচনের সময় সংবাদ মাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে আমেরিকাবাসী যথেষ্ট বিরক্ত। গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ সংবাদমাধ্যম। তবে গণতন্ত্রের ধারণাও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এক থাকে না। মার্কিন রাজনীতিতে যেভাবে বহুস্বরের প্রকাশ উঠে আসছে, তার সঙ্গে সংবাদমাধ্যম এখনও তাল মেলাতে পারছে না। এমনটাই জানাচ্ছে রিপোর্ট।

ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে আমেরিকান প্রেস ইনস্টিটিউশন এবং দ্য অ্যাসোসিয়েট প্রেসের মিলিত উদ্যোগে তৈরি এই প্রকল্পের কাজ ছিল সংবাদ মাধ্যম নিয়ে আমেরিকার মানুষের মনোভাব বোঝার চেষ্টা করা। এবং সেইসঙ্গে অবশ্যই মানুষ ঠিক কীভাবে এই মাধ্যমটিকে দেখতে চাইছে, তার একটা রূপরেখা তৈরি করা। রিপোর্টে মূলত পাঁচটি বিষয়ের উপর গুরুত্ব দিয়েছেন সমীক্ষকরা।

প্রথমত, আমেরিকার মানুষ মনে করছেন আজ থেকে ৮০ বছর আগে মানুষের সচেতনতার মাত্রা যা ছিল, তার থেকে এখন অনেকটাই বেড়েছে। মানুষ এখন সমস্ত বিষয়কে নিজের মতো করে ব্যাখ্যা করতে প্রস্তুত। সেখানে সমস্ত বিষয়ে সংবাদমাধ্যমকে আলাদা করে বক্তব্য রাখতে হবে, এমনটা নয়। তাঁরা মানুষের প্রহরীর ভূমিকা ছেড়ে সংবাদ পরিবেশনের ভূমিকা পালন করুন। যথাযথভাবে নির্ভুল খবর পৌঁছে দিলে মানুষ নিজেই তার বিচার করতে পারবে। দ্বিতীয়ত, আমেরিকার রাজনৈতিক পরিসর এখন হোয়াইট হাউসের বাইরে অনেকদূর বিস্তৃত। সারা দেশজুড়ে ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার আন্দোলন সেই চেহারা দেখিয়ে দিয়েছে। আরও নানা স্তরে নিপীড়িত মানুষ নিজেদের দাবিদাওয়া নিয়ে জোট বাঁধছেন। সেইসব সংবাদ যথাযথভাবে এসে পৌঁছচ্ছে না বলেই মনে করছেন অনেকে।

পাশাপাশি মানুষের জাতীয় সম্পত্তি নিয়ে ক্ষমতাসীন মানুষরা সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে মানুষের সামনে সেই তথ্য তুলে ধরা, মানুষের দাবিদাওয়াকে যথাযথভাব প্রচারের আলোয় নিয়ে আসা এবং দেশের অর্থনীতির বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহের কাজে সংবাদ মাধ্যমকে আরও বেশি যত্নশীল হতে হবে বলেই মনে করছেন সমীক্ষকরা। অন্তত সাধারণ মানুষের মধ্যে থেকে উঠে আসা বক্তব্য থেকেই এই চাহিদাগুলি স্পষ্ট। সমীক্ষকরা আরও দেখিয়েছেন, বিগত কয়েক দশক ধরে আমেরিকার সংবাদ মাধ্যমের গুরুত্ব ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে এসেছে। মানুষ এখন রীতিমতো মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন সংবাদপত্র থেকে। ইন্টারনেট মাধ্যমে বেশ কিছু ব্যতিক্রমী সংবাদ উদ্যোগ গড়ে উঠলেও মূল ধারার মাধ্যম এখনও পরিস্থিতির সঙ্গে নিজেকে বদলাতে পারেনি। তারা ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়ার বদলে একই ভুল বারবার করে চলেছে। এই রিপোর্ট কি সংস্থাগুলিকে আবার নতুন করে ভাবতে সাহায্য করবে?

আরও পড়ুন
মহামারীর অসহায়তাকে ক্যামেরাবন্দি করে সংবাদজগতে সেরা ম্যাডস নিসেন

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
এই প্রথম সংবাদ-উপস্থাপকের ভূমিকায় কোনো রূপান্তরকামী, অনন্য নজির বাংলাদেশে

More From Author See More