এককালে মাধ্যমিক প্রশ্নপত্রের রচনা বিভাগের হট টপিক ছিল ‘গাছ আমাদের বন্ধু’। মুখস্ত বুলি খাতায় কলমে ফুটে উঠত অনেক সময়ই। কিন্তু সেই রচনার নির্যাস, অভিব্যক্তি প্রত্যেক ছাত্রই কি আত্মস্থ করতে পারে? এই বিষয়ে সন্দেহ থেকেই যায়। তবে সুন্দরবনের ছাত্রছাত্রীরা এবার অনন্য এক নজির গড়ল। ‘বন্ধু’ নয়, বরং ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ করল চির-‘সবুজ’ দের।
গত মে মাসেই আমফানের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছিল সুন্দরবন। ভেসেছিল বিস্তীর্ণ অঞ্চল। ভেঙেছিল বহু বহু নদীবাঁধ। আরও একবার প্রমাণিত হয়েছিল প্রকৃতির দানের কাছে তুচ্ছ মানুষের সৃষ্টি। ইট-পাথরের বাঁধ ধসে পড়লেও, ক্ষয়ক্ষতি সামলেই মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে ছিল সুন্দরীর সারি। যদি এই ম্যানগ্রোভ না থাকত তাহলে সুন্দরবনের ওপর ঝড়ের ধ্বংসলীলা বাড়ত কয়েকগুণ।
আমফানের পরে প্রাকৃতিক এই ভারসাম্যকে ফিরিয়ে আনার জন্যই বহু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সরকারের তরফ থেকেই যেমন বৃক্ষরোপণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বন দপ্তরকে। তেমনই ম্যানগ্রোভ রোপণে এগিয়ে এসেছেন স্থানীয় অধিবাসীরাও। তবে এসবের মধ্যেও জীব-জীবীকার জন্যই কিছু মানুষ ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন বনভূমিকে। তাঁদেরকে দৃঢ় বার্তা দিতেই এবার এগিয়ে এল পড়ুয়ারা। সোমবার রাখি পূর্ণিমা উপলক্ষে নদীতে হাঁটুজলে নেমেই গাছে রাখি বাঁধল খুদে ছাত্রছাত্রীরা। এমনই দৃষ্টিনন্দন বার্তাবহুল দৃশ্য দেখা গেল ক্যানিংয়ে। দুর্যোগের নির্বাক রক্ষাকর্তাদের বাঁচিয়ে রাখার দায়িত্ব যে সকলেরই, তা আরও একবার মনে করিয়ে দিল ছাত্রছাত্রীরা। মনে করিয়ে দিল এই সবুজ পরিজনদের সঙ্গে দৃঢ় সম্পর্ক স্থাপন করা আমাদের কর্তব্যও...
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
মারা গেছে ‘পবিত্র’ গাছ, শোকে এখনও পাথর ইকুয়েডরের এই পাহাড়ি গ্রাম