হাত স্যানিটাইজ করা এবং মাস্কের ব্যবহার প্রাথমিকভাবে করোনার সংক্রমণ থেকে বাঁচাতে পারে আমাদের। এই তথ্য প্রকাশ হওয়ার পরেই বাজারে বিপুল চাহিদা তৈরি হয়েছিল স্যানিটাইজারের। পাওয়া যাচ্ছিল না মাস্কও। পরিস্থিতি সামাল দিতে এগিয়ে এসেছিল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি। স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটিগুলির ল্যাবে বানানো স্যানিটাইজার সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছিল শিক্ষার্থীরা।
কিন্তু ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। এখন শুধু মাত্র হাত ধুলেই যে নিরাপদ থাকা যাবে এমনটা নয়। খাবার বা অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসের আদান প্রদানের মধ্যেও এক জায়গা থেকে অন্যত্র ছড়িয়ে পড়তে পারে ভাইরাস। সুতরাং উপায়? রাস্তা দেখালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই। তৈরি হল আলট্রা ভায়োলেট রে স্যানিটাইজার র্যাকেট।
লাভলি প্রফেশনাল ইউনিভার্সিটির ছাত্র অনন্ত কুমার রাজপুত এই আলট্রা ভায়োলেট রে স্যানিটাইজার র্যাকেটটি তৈরি করেছে। এই কাজে, অনন্তকে কাজে সাহায্য করেছেন ওই বিশ্ব বিদ্যালয়েরই দুই অধ্যাপক।
হুবহু টেনিস র্যাকেটের মতোই দেখতে এই যন্ত্র। তবে র্যাকেটের জালের জায়গায় লাগানো আছে দুটি ইউভি রে টিউব। সেখান থেকেই আলো বেরিয়ে জীবাণুমুক্ত করবে কোনো জিনিসের পৃষ্ঠতলকে। ধ্বংস করবে করোনা ভাইরাসকেও। এই যন্ত্র কাজ করে অনেকটা মেটাল ডিটেক্টর স্ক্যানারের মতোই। কোনো জিনিসকে স্যানিটাইজ করতে গেলে মাত্র ৪-৫ ইঞ্চি দূরত্বের মধ্যে রেখে স্ক্যান করে নিতে হবে এই র্যা কেট দিয়ে। মাত্র ৬০ সেকেন্ডের মধ্যেই জীবাণুমুক্ত হবে সেই পৃষ্ঠতল।
বলাই বাহুল্য, র্যাকেটটি বিদ্যুৎচালিত। তবে ইলেকট্রিসিটি অথবা চার্জেবল ব্যাটারি উভয়ের মাধ্যমেই চলতে পারে। মাত্র ৩০ মিনিট চার্জ দিলে, ১৫ মিনিট একটানা কাজ করতে পারবে এই স্যানিটাইজিং র্যাকেট। ইতিমধ্যেই পেটেন্টের জন্য দরখাস্ত করেছে ওই ছাত্র। এখন মূল লক্ষ্য দ্রুত বাণিজ্যিকভাবে বাজারে নিয়ে আসা এই আবিষ্কারকে। শুরু হয়েছে উৎপাদন শিল্পগুলির সঙ্গে কথাবার্তা।
কাজে ভারী হলেও, দাম সাধ্যের মধ্যেই থাকবে এই যন্ত্রের। হাজার টাকার মধ্যেই মিলবে এই যন্ত্র। লাভলি প্রফেশনাল ইউনিভার্সিটির চ্যান্সেলর অশোক মিত্তাল এই আবিষ্কারের বিষয়ে যথেষ্ট আশাবাদী। তিনি জানান, এই কাজের মধ্যে বিপুল সম্ভাবনা আছে। কোভিড-১৯ মহামারীর সময়ে দাঁড়িয়ে এই আবিষ্কার মানুষের উপকারে যে আসবে, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।