কিছুদিন আগেই দিল্লির বায়ুর গুণমানকে ভয়ঙ্করভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছিল কৃষিজমির অবশিষ্টাংশের দহন। এবার সেই সমস্যার সম্মুখীন কলকাতা। ফসল কাটার মরশুমে দক্ষিণবঙ্গ-জুড়ে কৃষিজমিতে চলছে ধানের অবশিষ্টাংশ পোড়ানো। আর যার ফলে ভয়ঙ্কর মাত্রার কার্বন মিশছে কলকাতার বাতাসে।
পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড সম্প্রতি স্যাটালাইট চিত্র বিশ্লেষণের মাধ্যমে প্রকাশ করে এই আশঙ্কার কথা। টেরা এবং অ্যাকোয়া কৃত্রিম উপগ্রহের তোলা কলকাতার বায়ুমণ্ডলের বেশ কিছু ইনফ্রারেড ছবি প্রকাশ্যে এনেছিল নাসা। দিল্লি আইআইটি’র সহযোগিতায় ল্যাবরেটরিতে পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের আধিকারিকরা বিশ্লেষণ করেন ছবিগুলির। সেখান থেকেই উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
রিপোর্টে জানানো হয় কলকাতার বায়ুর গুণমান কমতে কমতে ডিসেম্বরে ‘আশঙ্কাজনক’ স্তরে এসে পৌঁছেছে। শীতকালে বায়ুর ঘনত্ব বেশি হওয়ার কারণে আরও প্রকোপ বাড়ছে দূষণের। চলতি মাসের ১ থেকে ১৯ তারিখের ছবির বিশ্লেষণে উঠে আসে বর্ধমান, বীরভূম, দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, হুগলি এবং মূর্শিদাবাদ— এই সাত জেলায় ভয়ঙ্করভাবেই চলছে খড় পোড়ানো। বিঘের পর বিঘে জমিতে অবশিষ্টাংশের দহনে মাত্রাতিরিক্ত কার্বন মিশছে বাতাসে। উল্লেখিত জেলাগুলি কলকাতা এবং হাওড়া— এই দুই শহরকে ঘিরে থাকায় সরাসরি প্রভাব ফেলছে বায়ুর মানে।
বাতাসের গুণমানের দিক থেকে এমনিতেও খুব একটা ভালো অবস্থায় ছিল না কলকাতা এবং হাওড়া। ঘোস্ট এয়ারোসলের উপস্থিতি চিন্তিত করে তুলেছিল পরিবেশবিদদের। তার ওপরে এবার ফসল কাটার মরশুম যে গোদের ওপর বিষফোঁড়া। করোনা আবহে চরম মাত্রার বায়ুদূষণ আরও ভাবিয়ে তুলছে দূষণ নিয়ন্ত্রণের আধিকারিকদের। ফসল পোড়ানোর মোকাবিলা করতে জৈব বিয়োজকের সাহায্য নিয়েছিল দিল্লি। কিন্তু কলকাতার ক্ষেত্রে বিপুল পরিমাণ এই অঞ্চলের দূষণ নিয়ন্ত্রণে এই পন্থা ঠিক কতটা প্রয়োগ করা সম্ভব, তা নিয়েই চিন্তায় পরিবেশবিদরা...
Powered by Froala Editor