বিজ্ঞান মানেই তো রহস্যময়। এই তো কিছুদিন আগেও ব্ল্যাক হোলের অস্তিত্ব সম্পর্কেই ধোঁয়াশা ছিল। এখন তার ছবি তুলতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু তার চরিত্র ঠিক কীরকম? কীভাবেই বা তৈরি হয় সেই ব্ল্যাক হোল? এসব প্রশ্নের উত্তর পেতেও হয়তো আর খুব বেশি সময় লাগবে না। কারণ বিজ্ঞানীরা এক অদ্ভুত ধাতুর কথা জানতে পেরেছেন সম্প্রতি। আর অদ্ভুতভাবে তার সঙ্গে মিলে যায় ব্ল্যাক হোলের বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য।
এই ধাতুর সন্ধান বিজ্ঞানীরা পেয়েছিলেন এই বছরের শুরুতেই। তবে তখন তার কোনো বিশেষ বৈশিষ্ট্যই বুঝতে পারেননি তাঁরা। শুধু অবাক হয়ে দেখেছিলেন এর বৈশিষ্ট দেখে। যে কোনো ধাতুর রোধ নির্ভর করে মূলত তিনটি বিষয়ের ওপরে। তারই মধ্যে একটি হল উষ্ণতা। তবে বিশেষ উষ্ণতায় (প্রায় শূন্য কেলভিন তাপমাতার কাছে) যে কোনো ধাতুর রোধ শূন্য হয়ে যায়। অবাধে সম্পন্ন করতে পারে বিদ্যুতের প্রবাহ। এই ধরণের অতিপরিবাহীর আবিষ্কার বহু আগেই হয়েছিল। কিন্তু এবার বিজ্ঞানীরা দেখলেন অতিপরিবাহীর তাপমাত্রা ওই বিশেষ উষ্ণতার উপরে নিয়ে গেলেও বজায় থাকে তার অতিপরিবাহী-চরিত্র। এই অবস্থায় তার রোধ তাপমাত্রার সঙ্গে সমানুপাতিক হয়ে যায়। যা হুবহু ব্ল্যাকহোলের মতই। আর তাই এই ধাতুর নাম দেওয়া হয়েছিল 'স্ট্রেঞ্জ মেটাল'।
তবে দীর্ঘ ৬ মাসের গবেষণার পর অবশেষে সেই আশ্চর্য ধাতু সম্পর্কে অনেক তথ্যই জানতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা। আর সম্প্রতি 'প্রসিডিংস অফ দ্যা ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্স' পত্রিকায়। যদিও কোয়ান্টাম স্তরে লক্ষ লক্ষ ইলেকট্রনের মিলিত চরিত্র বোঝা বেশ কঠিন ছিল। তবে এখানে দুটি গাণিতিক পদ্ধতির সাহায্য নিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। প্রথমে তাঁরা কোয়ান্টাম এম্বেডিং পদ্ধতিতে একটা স্যাম্পেল তৈরি করলেন। আর তারপর সেই স্যাম্পেল বিশ্লেষণ করে মন্টে কার্লো অ্যালগরিদমের সাহায্যে একটা সামগ্রিক বৈশিষ্ট্য বোঝার চেষ্টা করলেন। আর তারপর যা তথ্য পেলেন, সেটা আরও আশ্চর্যজনক।
আরও পড়ুন
ব্ল্যাক হোল থেকে আপনাআপনি বেরিয়ে আসছে 'আলো'! অবাক বিজ্ঞানীরা
এর আগে কোয়ান্টাম স্তরে ফার্মি লিকুইড এবং স্পিন গ্লাসের অস্তিত্বের কথা আগেই জানা ছিল। তবে এই নতুন ধাতুর চরিত্র এদের মাঝামাঝি। সেইসঙ্গে সেন্টার ফর কম্পিউটেশনাল কোয়ান্টাম ফিজিক্সের বিজ্ঞানী অলিভিয়ার পার্কলেট জানিয়েছেন ব্ল্যাক হোলের সঙ্গে এই ধাতুর এমন কিছু সাদৃশ্য দেখা গিয়েছে যা বিজ্ঞানের জগতে এক নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে।
আরও পড়ুন
সুইজারল্যান্ডের সার্নে আবিষ্কৃত নতুন কণা, টেট্রাকোয়ার্কের এহেন রূপে উচ্ছ্বসিত বিজ্ঞানীরা
তবে এই পুরো গবেষণাই চলেছে তাত্ত্বিক ব্যাখ্যার মধ্যে। পরীক্ষাগারে হাতে কলমে পরীক্ষায় হয়তো আরও অনেক অজানা বিষয় উঠে আসতে পারে। তবে সেসব অনেক সময়ের অপেক্ষা।
আরও পড়ুন
ছায়াকে কাজে লাগিয়েই তৈরি হবে বিদ্যুৎ, অভিনব প্রযুক্তি সিঙ্গাপুরের বিজ্ঞানীদের
Powered by Froala Editor