সমুদ্রঝড়ে সরে গেল বালি, বেরিয়ে এল ৪৫০০ বছরের প্রাচীন বনভূমি!

বিগত গ্রীষ্মে বেশ কিছু ঝড় আছড়ে পড়েছে ইংল্যান্ড এবং আয়ারল্যান্ড উপকূলে। এবছর তার তীব্রতা বেশি ছিল ঠিকই, কিন্তু এমনটা তো হয়েই থাকে। অথচ তার মধ্যেই যে উঠে আসবে প্রাচীনকালের হারিয়ে যাওয়া একটি জঙ্গল, সেকথা কেউ ভাবতেও পারেননি। হ্যাঁ, এমন অভাবনীয় ঘটনারই সাক্ষী থাকল আয়ারল্যান্ডের পশ্চিম উপকূল।

আগস্টের ২৪ তারিখে উপকূল অঞ্চলে আছড়ে পড়ে সমুদ্রঝড় ফ্রান্সিস। ঝড় আসা মানেই নানা সতর্কতা গ্রহণ করা এবং ঝড় থেমে গেলে ক্ষয়ক্ষতির হিসাব, এরকমই চলছিল। কিন্তু তার মধ্যেই হঠাৎ দেখা যায় পশ্চিম উপকূল এলাকায় প্রায় ২১ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত বালিয়াড়ির নিচ থেকে বেরিয়ে এসেছে অসংখ্য গাছ। এতদিন মাটির নিচে চাপা পড়ে থাকায় কোনো গাছই বেঁচে নেই। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হল, এখানে এমন একটা জঙ্গলের কথা তো কেউ জানতেনই না।

এখনও অবধি যদিও কোনো বিশদ গবেষণা হয়নি, কিন্তু প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে গবেষকদের অনুমান মোটামুটি ৪৫০০ বছর আগে এখানে আস্ত একটা জঙ্গলের অস্তিত্ব ছিল। অবশ্য এই আবিষ্কার যতই উত্তেজক হোক, এর মধ্যে আশঙ্কার কারণ খুঁজে পাচ্ছেন অনেকেই। হ্যাভার্স্টোয়াথ ইউনিভার্সিটির গবেষক হাওয়েল গ্রিফিতের কথায়, এতদিন কোনো ঝড় এই জঙ্গলের ধ্বংসাবশেষ বের করে আনতে পারেনি। এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে ফ্রান্সিসের ধ্বংসাত্মক ক্ষমতা কত বেশি ছিল। দিনে দিনে সমুদ্রঝড়ের এই শক্তিবৃদ্ধি যথেষ্ট আশঙ্কার বিষয় বলেই মনে করছেন তিনি।

যদিও এর মধ্যে যে ঐতিহাসিক আবিষ্কার ঘটে গেল, তার জুড়ি মেলা ভার। আর সেইসঙ্গে আয়ারল্যান্ডের অতি প্রাচীন এক উপকথার সঙ্গে অদ্ভুত মিল পাওয়া যাচ্ছে এই আবিষ্কারের। সেই উপকথা অনুযায়ী ওই অঞ্চলেই সমুদ্রের নিচে হারিয়ে গিয়েছিল এক অতি প্রাচীন সভ্যতা। সেই সভ্যতার নাম সাঙ্কেন হান্ড্রেড। তবে এই জঙ্গলে আদৌ মানুষের বাস ছিল কিনা, সেবিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার জন্য দীর্ঘ গবেষণার প্রয়োজন।

Powered by Froala Editor