করোনার জেরে জোর ধাক্কা খেয়েছে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা। রাজ্যেও স্কুল-কলেজের হাল একই। এই পরিস্থিতির জেরেই আগেই ইউজিসি স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর শিক্ষাবর্ষে বেশ কিছু বদল এনেছিল দু’দিন আগেই। এবার মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকেও বেশ কিছু বদলের পরিকল্পনা করছে রাজ্য। সরকারি স্তরেই এই বিষয়টি বর্তমানে পর্যালোচনা করে দেখছে রাজ্যের সিলেবাস কমিটি।
করোনা মহামারীর কারণে মাধ্যমিক স্তরের পরীক্ষার্থীরা আড়াই মাস ক্লাস করার সুযোগ পেলেও এ বছর এখনও অবধি ক্লাসের সুযোগ হয়নি উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের। আর সেখানেই তৈরি হচ্ছে সমস্যা। গত বছরের মতো ফেবরুয়ারিতে মাধ্যমিক এবং মার্চের মাঝামাঝি সময় দ্বাদশ শ্রেণীর বোর্ড পরীক্ষার আয়োজন হলে সমস্যার মুখে পড়তে পারে শিক্ষার্থীরা, উঠে এসেছিল সেই সম্ভাবনাই। তাই সিলেবাস কমিশন উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার সময়সূচি অনেকটাই পিছিয়ে দেওয়ার কথা ভাবছে। ২০২১ উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা হতে পারে জুন মাসে। তবে মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে সিলেবাস কমিয়ে এনে একই সময়ে পরীক্ষা নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে সিলেবাস কমিশনের। সিলেবাস সব মিলিয়ে কমতে পারে ৩০-৪০ শতাংশ পর্যন্ত।
সম্পূর্ণ পর্যালোচনার পর এই বিষয়ে রাজ্যের কাছে রিপোর্ট পেশ করবে সিলেবাস কমিটি। রিপোর্ট জমা পড়লে মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে রাজ্য, এমনটাই জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তবে সিলেবাস কমিটির প্রাথমিক পরিকল্পনায় সন্তুষ্ট পড়ুয়ারাও। এখন কী চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য, তা-ই দেখার।
দেশের বেশ কয়েকটি রাজ্যে সোমবার থেকেই আংশিকভাবে খুলে গেছে স্কুল। তবে বাংলায় ৩০ সেপ্টেম্বর অবধি বন্ধ থাকছে সমস্ত স্কুলই। কবে থেকে শুরু হবে স্কুলের পঠন-পাঠন, সে ব্যাপারে এখনও নিশ্চিত করে কিছুই জানায়নি রাজ্য সরকার। তবে অক্টোবর মাসেই স্কুল খোলার পক্ষপাতী নন অধিকাংশ অভিভাবকই।
আরও পড়ুন
অনলাইনে ক্লাস করবে বোন, কারাগারে উপার্জিত অর্থ দিয়েই স্মার্টফোন উপহার দাদার
সম্প্রতি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি স্কুল অনলাইন ফর্ম এবং ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অভিভাবকদের মতামত নিয়েছিল স্কুল খোলার বিষয়ে। সামাজিক দূরত্ব, বাধ্যতামূলক মাস্ক-গ্লাভসের ব্যবহার এবং স্কুলের স্যানিটাইজেশনের বন্দোবস্ত থাকলেও ৯০ শতাংশ অভিভাবকই ভরসা পাচ্ছেন না এই পরিস্থিতিতে স্কুলে পাঠাতে তাঁদের সন্তানদের।
অভিভাবকদের এই মতামতই প্রতিফলিত হয়েছে অধিকাংশ রাজ্যের সিদ্ধান্তে। যদিও গত ২১ সেপ্টেম্বর থেকেই স্কুল খোলার অনুমতি দিয়ে দিয়েছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। জানিয়েছিল ৫০ শতাংশ শিক্ষক এবং স্টাফদের নিয়েই খুলতে পারে স্কুলগুলি। তবে অভিভাবকদের লিখিত অনুমতি-পত্র না নিয়ে এলে প্রবেশাধিকার পাবে না ছাত্র-ছাত্রীরা, তাও জানিয়েছিল কেন্দ্র। এই পরিস্থিতিতে এবং অভিভাবকদের সার্বিক মতামতে ওপর ভিত্তি করে পশ্চিমবঙ্গের সিদ্ধান্ত কোন দিকে যাবে, তা এখনও অনিশ্চিত...
আরও পড়ুন
বাড়ি গিয়ে ক্লাস করাচ্ছেন স্কুল শিক্ষকরা, শিক্ষাব্যবস্থার অভিনব ছবি সিকিমে
Powered by Froala Editor