বন্ধ হচ্ছে কাগজের কাপের ব্যবহার, দূষণ-রোধে পদক্ষেপ ম্যাকডোনাল্ড ও স্টারবাক্সের

দূষণের পরিমাণ বাড়ছে প্রতিদিন। আর এই পরিস্থিতিতে দূষণ মোকাবিলার পুরনো পদ্ধতিগুলোও আর চলছে না। কফি বা অন্যান্য হট ড্রিংকের জন্য যে কাগজের কাপ ব্যবহার করা হয়, সেগুলোও ফেলে দেওয়ার সময় এসেছে। থুরি, সেগুলো ফেলে দেওয়া থেকেই সমস্যার সূত্রপাত। তাই এবার নতুন কিছু ভাবতে হবে। আর বাজারে সেই নতুন কাপ এসে গিয়েছে। ম্যাক-ডোনাল্ড আর স্টারবাক্সের যৌথ উদ্যোগে তৈরি হল নতুন ধরনের রিসাইকেলেবল কফি কাপ।

আরও পড়ুন
বাতিল কাগজ থেকেই জন্মাবে গাছ, অভিনব কীর্তি বঙ্গসন্তানের

প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালের গোড়াতেই। বিশ্বের প্রথম সারির উদ্ভাবকদের ডাকা হয়েছিল একটি প্রতিযোগিতার জন্য। প্রতিযোগিতার নাম ছিল নেক্সট-জেন কাপ। প্রত্যেকেই সেখানে কাপ, স্ট্র এবং লিড তৈরির জন্য কিছু অভিনব পরিকল্পনা জমা দিয়েছিল। আর সবদিক বিচার করে ১২ জন উদ্ভাবকের একটি দলকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।

আরও পড়ুন
প্লাস্টিক খেয়ে হজম করে ফেলে শুঁয়োপোকা, পরিবেশ রক্ষায় নয়া আবিষ্কার বিজ্ঞানীদের

পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হতে বেশি সময় লাগেনি। প্রথমেই এগিয়ে এসেছিল ম্যাক-ডোনাল্ড এবং স্টারবাক্স। পরে সেই উদ্যোগে যোগ দেয় ওয়েন্ডিস, নেসলের মতো কোম্পানিও। আর বছর ঘুরতে না ঘুরতেই সমস্ত উপকরণ নিয়ে হাজির হন সেই ১২ জন উদ্ভাবক। গত মাসে ক্যালিফোর্নিয়াতে শুরু হয় একটি পাইলট প্রোজেক্ট। একটি স্বাধীন কফিশপ। সেখানে কাগজের কাপের পরিবর্তে ক্রেতাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় নেক্সট-জেন কাপ। সঙ্গে ট্র্যাকিংএর জন্য ছিল আরএফআইডি চিপ এবং কিউআর কোড। আর তারপর, পুনর্ব্যবহারযোগ্য এই কাপগুলো সংগ্রহ করে আবার ব্যবহার করা হয়। অনেক সময় ক্রেতারা নিজেরাও এইসব কাপ ব্যবহার করছেন, এমনটাও দেখা গিয়েছে।

আরও পড়ুন
রান্নার তেলে ছুটবে গাড়ি, পরিবেশ বান্ধব নতুন প্রযুক্তি ভারতে

ক্যালিফোর্নিয়া থেকে এই উদ্যোগ ইতিমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে ব্রিটেন, জার্মানি, ফ্রান্সের মতো ইউরোপীয় দেশগুলিতেও। আর সব জায়গাতেই ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ফলে কাগজের কফিকাপের দিন যে শেষ, সেকথা বলাই যায়। আর এই উদ্যোগ যে পরিবেশে দূষণের পরিমাণ অনেকটাই কমাতে পারবে সে ব্যাপারে আশাবাদী উদ্যোক্তারাও।

আরও পড়ুন
পেট্রোলের বিকল্প সমুদ্র-শৈবাল, পরিবেশ দূষণ কমাতে নতুন জ্বালানির হদিশ

পরিবেশ বাঁচাতেই প্লাস্টিকের কাপের বদলে এসেছিল কাগজের কাপ। এতে প্লাস্টিকের পরিমাণ খুবই কম, বেশিরভাগটাই কাগজ। তবে তরল পানীয় যাতে কোনোদিক থেকে গড়িয়ে না পড়ে, সেজন্য পলিথিনের একটা আস্তরণ দেওয়া হত। আর এর ফলেই যত বিপত্তি। কাগজের উপর পলিথিনের আস্তরণ থাকার জন্যই এইসব কাপ আর পুনরায় ব্যবহার করা যেত না। অথচ সারা পৃথিবীতে এর চাহিদা কম ছিল না। প্রতি বছর প্রায় ২৫০ বিলিয়ন কাপ ব্যবহৃত হত। আর তারপর সেগুলো ফেলেই দিতে হত। কাগজের এইসব কাপ গিয়ে পড়ত নদীতে বা অন্য জলস্তরে। ফলে জলজ বাস্তুতন্ত্রও ক্ষতিগ্রস্ত হত। নতুন এই উদ্ভাবন যে সেদিক থেকে অনেকটাই উপকারী, সেকথা মনে করছেন উদ্যোক্তারা। এখন বিপন্ন পরিবেশকে বাঁচাতে এইসমস্ত উদ্যোগ কতটা কার্যকর হয়, সেদিকেই তাকিয়ে আছেন সবাই।