সামাজিক মাধ্যমের দৌলতে ছড়িয়ে পড়েছে একটি মর্মান্তিক ছবি। ছবিতে দেখা যাচ্ছে একদল ছোটো-বড়ো হাতি। তবে জঙ্গলে বা রাজপথে নয়, হাতির দলটিকে দেখা গিয়েছে এক স্তূপ আবর্জনার উপরে। খাদ্যের অভাবে জঙ্গল থেকে বেরিয়ে এসে আবর্জনার মধ্যেই খাবারের সন্ধান করছে তারা। আর সবচেয়ে আশঙ্কার বিষয়, সেইসব আবর্জনার মধ্যে আছে প্লাস্টিকের সরঞ্জামও। আর এইসমস্ত প্লাস্টিক হাতির শরীরে প্রবেশ করলে যে তাদের জীবনসঙ্কট দেখা দিতে পারে, সেকথা বলাই বাহুল্য।
শ্রীলঙ্কার জাফনা শহরের ফটোগ্রাফার থার্মাপ্ল্যান তিলক্সন এই ছবিটি তুলেছেন ওলুভিল শহরের একটি বর্জ্য নিষ্কাশন এলাকায়। তাঁর কথায়, শ্রীলঙ্কা তো বটেই, দক্ষিণ এশিয়ার কোনো দেশেই এই ছবিটা খুব বিরল নয়। একটি সামগ্রিক সঙ্কটের সামান্য একটি খণ্ডচিত্রকে ক্যামেরায় বন্দি করেছেন তিনি। প্রসঙ্গত, দক্ষিণ ভারতেও কয়েক বছর আগে একই ছবি দেখা গিয়েছিল। সংরক্ষণ প্রক্রিয়ার অভাব এবং বনভূমি হ্রাসের কারণেই বিপদে পড়েছে এই বিরাট প্রাণী।
আমপারা জেলার ওলুভিল শহরের কাছেই আছে একটি সংরক্ষিত বনভূমি। তার অদূরেই এমন বর্জ্য নিষ্কাশন ক্ষেত্র কেন রয়েছে, এই প্রশ্নও তুলেছেন অনেকে। অবশ্য পৌরসংস্থার তরফ থেকে জানানো হয়েছে, এলাকাটি কিছুদিন আগে পর্যন্ত কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘেরা ছিল। ফলে পশুরা সেখানে প্রবেশ করতে পারত না। সম্প্রতি সেই বেড়া ভেঙে পড়েছে। তবে কিছুদিনের মধ্যেই আবার সেটি গড়ে তোলা হবে। তবে বিশেষজ্ঞদের দাবি, এভাবে পরিস্থিতির সমাধান সম্ভব নয়। পশুরা জঙ্গলে খাদ্য না পেয়েই বাইরে বেরিয়ে আসছে। ফলে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে প্রথমে জঙ্গল বাঁচাতে হবে।
বর্তমানে পরিবেশের নানা সঙ্কটের মধ্যে অন্যতম সমস্যা প্লাস্টিক দূষণ। শুধুই স্থলভাগ নয়, সমুদ্রেও প্লাস্টিকের পরিমাণ জলচর প্রাণীদের অস্তিত্বকে বিপন্ন করেছে। প্লাস্টিক মিশছে পাখিদের খাদ্যেও। আর যেহেতু প্লাস্টিকের পলিমার কোনো প্রাণীর শরীরেই ছোটো অনুতে ভেঙে যায় না, ফলে নানা ধরনের রোগের প্রকোপও ছড়িয়ে পড়ে। এমনকি প্রাণহানির ঘটনাও অস্বাভাবিক নয়। এই সমস্যার হাত থেকে বাস্তুতন্ত্রকে বাঁচাতে না পারলে শেষ পর্যন্ত বিপন্ন হবে মানুষের অস্তিত্বও।
আরও পড়ুন
‘শত্রু এলে অস্ত্র হাতে লড়তে জানি’, ভারত-চিন যুদ্ধে গানই হাতিয়ার হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের
Powered by Froala Editor