দিব্যি দেখা যাচ্ছে বাদামি শুকনো পাতা, মরচে রঙের গাছের ডাল। নিতান্তই একটি গাছের শাখার ছবি। প্রাণের স্পন্দন নেই কোনো। কিন্তু এই ছবির মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে একটি সরীসৃপ। যা প্রথমে দেখলে বোঝাই যাবে না। ভারতের বনদপ্তর বিভাগের আধিকারিক রমেশ পাণ্ডে এমনই এক ধাঁধাঁর ছবি ট্যুইট করলেন। কিছুক্ষণ এই ছবিটির দিকে ভালো করে দেখলেই চমকে উঠবে যে কেউ।
রহস্যে মোড়া পৃথিবীর প্রাণীজগৎ। হাজার হাজার বিস্ময়কর জীবের বাসস্থান এই পৃথিবী। তার বেশিরভাগটাই অজানা এখনও আমাদের কাছে। অথবা তাদের ব্যাপারে ধারণা রয়েছে সীমিত কিছু মানুষের কাছে। তেমনই একটি প্রাণী স্যাটানিক লিফ টেল লিজার্ড। একমাত্র মাদাগাস্কার চিরহরিৎ অরণ্যেই দেখতে পাওয়া যায় এই বিচিত্র প্রাণীটিকে।
খাদ্য-খাদক সম্পর্কের ওপরেই দাঁড়িয়ে রয়েছে গোটা পৃথিবীর জীব-বৈচিত্র্য। তাই শিকারি প্রাণীদের থেকে বাঁচতে বিবর্তনের ধারা মেনেই বাঁচার কৌশল আয়ত্ত করেছে প্রাণীরা। সেই মতোই তৈরি হয়েছে তাদের শরীরবৃত্তীয় গঠন। স্যাটানিক লিফ টেল লিডার্ডও আয়ত্ত করেছে খাদকদের থেকে বাঁচার উপায়। দক্ষতা অর্জন করেছে পরিবেশের মধ্যেই নিজেকে লুকিয়ে ফেলার। যেকোনো সরু শাখার সঙ্গে দেহকে বেঁকিয়ে মিশে যেতে পারে প্রাণীটি। লেজও চ্যাপ্টা হয় পাতার মতই। এ যেন এক আশ্চর্য ক্যামোফ্লাজ।
তবে শুধু বাদামি নয়। গাছের রঙের সঙ্গেই রং বদলাতে পারে এই প্রাণীটি। হলুদ, কমলা, লাল, সবুজ, গোলাপি সব রঙেরই সরীসৃপের অস্তিত্ব রয়েছে এই প্রজাতির। রমেশ পাণ্ডের পোস্ট করা ছবিটি রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায় প্রকাশের পরই। বিস্ময়কর এই প্রাণীর সন্ধান পেয়ে উত্তেজিত দর্শকরাও। তবে এটি ২০০৯ সালে মাদাগাস্কারের আন্দাসিবে-মান্তাদিয়া জাতীয় উদ্যানে তোলা একটি ছবি। বর্তমানে ক্রমশ ফুরিয়ে আসছে আশ্চর্যকর প্রাণীটির অস্তিত্ব। বিপন্নপ্রায় প্রাণীর তালিকায় ইতিমধ্যেই নাম লিখিয়েছে স্যাটানিক লিফ টেলড লিজার্ড।
Powered by Froala Editor