১৯৯৭ সাল। পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে তখন চলছে স্পোর্টিং লিসবন ক্লাবের অনূর্ধ্ব ১৫-র তিনদিনের বাছাই পর্ব। পর্তুগালের এই নাম করা ক্লাবে জায়গা পেতেই ছুটে এসেছিল দেশের বিভিন্ন অ্যাকাডেমির খুদে তারকারা। হাজির হয়েছিল ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো ডস স্যান্টোস অ্যাভিয়েরো নামের এক কিশোরও। বয়স বারো। তবে বাকিদের মতো সেভাবে ফুটবলে উল্লেখযোগ্য কোনো অ্যাকাডেমির শিক্ষার্থী নয় সে। বাবার দৌলতেই বছর তিনেক খেলেছে স্থানীয় ক্লাব অ্যান্ডোরিনহাতে।
তবে তিনদিনের ট্রায়ালে বাকিদের পিছনে ফেলেই পছন্দের প্রথম সারিতে জায়গা করে নিয়েছিল সেই খুদে ফুটবলার। দেড় হাজার পাউন্ডের চুক্তি হয়েছিল রাজধানীর রাজকীয় ক্লাবটির সঙ্গে। আর তারপর বাকিটা ইতিহাস। স্পোর্টিং লিসবন অজান্তেই পৃথিবীর অন্যতম ফুটবল প্রতিভার আঁতুড়ঘর হয়ে গেছে কখন। এবার ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোকে সম্মান জানিয়েই ক্লাবের অ্যাকাডেমির নামকরণ করতে চলেছে এই পর্তুগিজ ক্লাব। স্পোর্টিং লিসবনের ফুটবলার তৈরির কারখানা এবার থেকে পরিচিত হবে ‘ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো অ্যাকাডেমিয়া’ নামেই।
উল্লেখ্য, এই ক্লাব এবং পর্তুগালের ইতিহাসে রোনাল্ডোই একমাত্র খেলোয়াড় যিনি একই মরসুমে অনূর্ধ্ব ১৬, ১৭ এবং ১৮— এই তিন বিভাগেই খেলেছেন। ২০০২ সালে অনুর্ধ্ব ১৮ থেকে মূল দলেও সুযোগ পেয়েছিলেন রোনাল্ডো। ধারাবাহিকতা বজায় রেখেই মাতিয়ে রেখেছিলেন লেফট-উইং। ফলে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের পাখির চোখ হয়ে উঠেছিলেন তিনি। একবছরের মধ্যেই ইউরোপের এই অন্যতম ক্লাবে খেলার সুযোগ এসেছিল ২০০৩ সালেই।
স্পোর্টিং লিসবন থেকে উঠে আসা তারকাদের মধ্যে সর্বকালীন রেকর্ডের অধিকারী ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। তাঁর ঝুলিতে রয়েছে পাঁচ-পাঁচটি ব্যালান ডিওর। সে-কথা স্মরণ করেই যেন সম্মাননা জানানো হল তাঁকে। সোমবার সন্ধেবেলাতেই ক্লাবের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে ঘোষণা করা হয় এই সিদ্ধান্তের কথা। ফুটবল আইকনকে সামনে রেখে কিশোরদের অনুপ্রেরণা জোগাতেই এই উদ্যোগ ক্লাবের।
গতকালই জুভেন্তাসের হয়ে এই মরসুমের প্রথম ম্যাচ খেলে ফেলেছেন ৩৫ বছর বয়সী পর্তুগিজ সুপারস্টার। মাটি থেকে আড়াইফুট উচ্চতায় উঠে অনবদ্য হেডে বল জালে জড়িয়ে ইতিমধ্যেই ফুটবল মহলে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু তিনি। মরশুমের শুরুয়াতে তার সঙ্গেই যেন বাড়তি পাওনা হিসাবে জুড়ল স্পোর্টিং লিসবনের এই সম্মাননা...
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
ক্রিকেট, হকি, ফুটবল – কলকাতার খেপ খেলার দুনিয়ায় একমেবাদ্বিতীয়ম রিচার্ড হুপার