আমেরিকার ক্লিভল্যান্ড শহরের বাসিন্দা জুলিয়ানা ফেদারম্যান। সদ্য এমবিএ উত্তীর্ণা তরুণীর মনের মধ্যে এখন নতুন কিছু করার স্বপ্ন। তবে প্রথমেই তাঁর মনে হয় ভাই মাইকেলের কথা। ছোটো থেকেই অটিস্টিক ডিস-অর্ডারে ভুগছেন মাইকেল ফেদারম্যান। এখন তাঁর বয়স ২২। তবুও কোনো বন্ধুর সঙ্গেই সহজে মিশতে পারেন না। আসলে সামাজিক রীতিনীতিই যে শিখে উঠতে পারেন না তাঁরা। আর সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে থাকা এমনই প্রাপ্তবয়স্ক মানুষদের একাকিত্ব দূর করতে জুলিয়ানা তৈরি করে ফেলেছেন একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন। মূলত চ্যাট অ্যাপ্লিকেশন হলেও এর অভিনব ইন্টারফেস তৈরি করা হয়েছে অটিস্টিক মানুষদের জন্যই।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী প্রতি ১৬০ জন মানুষের মধ্যে একজনের মধ্যে দেখা যায় অটিজম স্পেকট্রাম ডিস-অর্ডার। এমনিতে এই হার খুব কম মনে হলেও পৃথিবীজুড়ে ছড়িয়ে থাকা মানুষের সংখ্যাটা নেহাৎ কম নয়। তথাকথিত সুস্থ মানুষদের সঙ্গে মেলামেশা প্রায় অসম্ভব এঁদের ক্ষেত্রে। আর সেই একাকিত্ব থেকেই জন্ম নেয় অবসাদ। মস্তিষ্কের আরও নানা ধরণের সমস্যা দেখা দিতে থাকে। তবে একটু সহানুভূতি পেলেই তাঁরা সমস্ত প্রতিকূলতা কাটিয়ে উঠতে পারেন। সেই জায়গাটাই তৈরি করে দিতে চাইছেন জুলিয়ানা। আর এই কারণেই তৈরি করে ফেলেছেন ‘মেকিং অথেন্টিক ফ্রেন্ড’ নামের চ্যাট-প্ল্যাটফর্ম। ১৩ বছরের বেশি সমস্ত বয়সের মানুষ এই অ্যাপ্লিকেশনে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন। কথাবার্তা ছাড়াও থাকছে নানা ধরণের ভার্চুয়াল গেমিং-এর ব্যবস্থা।
গত ১৩ নভেম্বর ওয়ার্ল্ড কাইন্ডনেস ডে-এর দিন অ্যান্ড্রয়েড এবং আই-ফোনের জন্য মুক্তি পায় এই অ্যাপ্লিকেশনটি। আর প্রথম অ্যাকাউন্টটি খুলেছেন মাইকেল। আমেরিকার ৩৫টি স্টেট ছাড়াও সারা পৃথিবীর ৪৫টি দেশে পরিষেবা পৌঁছে দিতে পেরেছেন জুলিয়ানা। ভাইয়ের অনুপ্রেরণাকে মাথায় রেখে ভবিষ্যতে এমন উদ্যোগ আরও নিতে চান বলেই জানিয়েছেন জুলিয়ানা।
Powered by Froala Editor