ইতিহাসকে বাঁচিয়ে রাখতে গেলে তাঁর ভালোভাবে সংরক্ষণ প্রয়োজন। শুধু ঐতিহাসিকরাই নন, আমরা সকলেই এমনটা বিশ্বাস করি। কিন্তু সেই সংরক্ষণের কাজ করতে গিয়েই যদি নষ্ট হয়ে যায় সবটা? সেটা যদি প্রাচীন কোনো আঁকা হয়, তবে ব্যাপারটা আরও ভয়াবহ জায়গায় চলে যায়। ঠিক সেই জিনিসটাই ঘটেছে স্পেনে। যেখানে বিখ্যাত শিল্পীর আঁকা ছবির সংরক্ষণের কাজ করতে গিয়ে এমনভাবে বিকৃত হয়ে গেছে, যে সেটাকে আর চেনাই যাচ্ছে না!
স্পেনের ভ্যালেন্সিয়ার এক আর্ট কালেক্টরের কাছে ছিল বিখ্যাত চিত্রশিল্পী বার্তেলোমে এস্তেবান মুরিলোর আঁকা একটি বিশেষ তৈলচিত্র। যেখানে দেখা যাচ্ছে মেরিকে। সম্ভবত সতেরো শতকে এটি এঁকেছিলেন তিনি। এত পুরনো একটি ছবি, একটু তো ফিকে হয়েই যায়। সেটাকেই একটু মেরামত করে, সংরক্ষণ করার জন্য একজনের কাছে দিয়েছিলেন। এর জন্য ব্যয়ও করেছিলেন প্রায় লাখ খানেক টাকা! কিন্তু ছবিটা যেন ঠিকঠাক হয়, সেটাই ছিল আসল কথা।
ছবিটা যখন হাতে পেলেন, তখন রীতিমতো হতাশ হয়ে পড়েন ওই আর্ট কালেক্টর। হতাশ বললেও অনেকটা কম বলা হয়। বার্তেলোমে এস্তেবান মুরিলোর অমন সুন্দর ছবির হাল কিনা এরকম! যেন কেউ জল দিয়ে ধোয়ার পর সামান্য রং পেনসিল দিয়ে কাঁচা হাতে একজনের মুখ এঁকে দিয়েছে! বোঝাই যাচ্ছে, কাজে ভুল হওয়ায় সেটা সামাল দিতে গিয়েই এই অবস্থা। পরবর্তীতে জানা যায়, যার কাছে সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধারের জন্য দেওয়া হয়েছিল, তিনি এই কাজের কিছুই জানেন না! সাধারণত ফার্নিচারের কাজ করে থাকেন!
এমন একটি ছবি সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন শিল্পীমহল। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে সংবাদপত্র— সব জায়গায় প্রতিবাদ জানাচ্ছেন তাঁরা। অবশ্য এটাই একমাত্র নয়। ২০১২ সালেও যিশুর একটি তৈলচিত্র পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ করতে গিয়ে পুরো নষ্ট হয়ে যায়। এমন দায়িত্বজ্ঞানহীনতা কি কাম্য? দিনের শেষে ক্ষতি তো হচ্ছে শিল্পের, ইতিহাসের। আইনগত দিক থেকে কি কড়া কোনো পদক্ষেপ নেওয়া যেত না? এমনটাই প্রশ্ন ঐতিহাসিকদের…
আরও পড়ুন
জোফানির আঁকা ‘দ্য লাস্ট সাপার’ লুকিয়ে আছে কলকাতাতেই, সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিদের আদলে শিষ্যদের মুখ
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
জন্মদিনেই চুরি, মিউজিয়াম থেকে উধাও ভ্যান গঘের আঁকা ছবি