রোগীর অবস্থা মরণাপন্ন। চিকিৎসকরাও হাল ছেড়ে দিয়েছেন। কোনোভাবেই আরোগ্যলাভ সম্ভব নয়। এরকম অবস্থায় অনির্দিষ্টকাল যন্ত্রণা ভোগ না করে কি স্বেচ্ছা মৃত্যুর পথ বেছে নিতে পারেন মানুষ? এই প্রশ্নে এখনও দ্বিধাবিভক্ত পৃথিবী। বহু দেশে স্বেচ্ছামৃত্যু আইনসঙ্গত। আবার বহু দেশে স্বেচ্ছামৃত্যু বা তাতে সাহায্য করা দণ্ডনীয় অপরাধ। আর এর মধ্যেই স্বেচ্ছামৃত্যুকে আইনসঙ্গত করার সিদ্ধান্ত নিল স্পেন। সম্প্রতি স্পেনের পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠ জনপ্রতিনিধির মত নিয়ে পাশ হয়ে গেল সেই বিল।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে সদ্য নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো স্যাঞ্চেজ এই বিল তৈরির প্রস্তাব দেন। পরবর্তীতে নির্বাচিত আইনি অনুমোদন নিয়ে সেই বিল তৈরি করা হয়। এই বিলে বলা হয়, চিকিৎসকরা যদি কোনো রোগীর আরোগ্যের বিষয়ে সম্পূর্ণরূপে হাল ছেড়ে দিয়ে থাকেন, তাহলে তিনি স্বেচ্ছামৃত্যুর সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে রোগীর লিখিত বক্তব্য থাকতে হবে। এবং অন্তত ১৫ দিনের ব্যবধানে তাঁকে নিজের সিদ্ধান্তে স্থির থাকতে হবে। তবে মৃত্যুর জন্য চিকিৎসকের সাহায্য নিতে হবে। আবার কোনো চিকিৎসক চাইলে এক্ষেত্রে সাহায্য না করার সিদ্ধান্তও নিতে পারেন।
স্পেনের পার্লামেন্টে ১৯৮ জন জনপ্রতিনিধি এই বিলের পক্ষে মত দেন। অন্যদিকে ১৩৮ জন প্রতিনিধি এই বিলের বিরোধিতা করেন। যদিও এই বিল আইনে পরিণত হওয়ার আগে সেনেটের অনুমোদন প্রয়োজন। আর সেই অনুমোদনও খুব তাড়াতাড়ি পাওয়া যাবে বলে বিশ্বাসী প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো। বেলজিয়াম, কানাডা, সুইৎজারল্যান্ড, নেদারল্যান্ড সহ পৃথিবীর নানা দেশে ইতিমধ্যে স্বেচ্ছামৃত্যু আইনসঙ্গত। যদিও অনেকেই এখনও এই মত মেনে নিতে পারেন না। স্পেনেও অনেকে অভিযোগ করেছেন, এই আইন মূল্যবোধের বিপক্ষে যাচ্ছে। তবে অনির্দিষ্টকাল যন্ত্রণা ভোগ করার চেয়ে মৃত্যুকে বেছে নেওয়া অনেক বেশি স্বস্তির। এখানে আইনি সাহায্য পাওয়া সত্যিই এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন।
Powered by Froala Editor