স্কুলে এক এক করে ঢুকছে ছাত্রীরা। বাধ্য মেয়ের মতো সবাই বসে পড়ছে নির্দিষ্ট চেয়ারে। একসঙ্গে হোমওয়ার্ক করছে। একসঙ্গে বুঝেও নিচ্ছে পড়া। সব মিলিয়ে, বেশ স্বাভাবিকই পরিবেশ। তবে একটু নজর করলে, চমকপ্রদ ব্যাপারটা চোখে পড়বে। যারা আসছে স্কুলে, তারা কেউই স্কুল ইউনিফর্ম পরা ছোট বাচ্চা নয়। তাঁরা সবাই, ঠাকুমা। হ্যাঁ, এই বৃদ্ধাদের নিয়েই দক্ষিণ কোরিয়ায় চালু রয়েছে এই স্কুল।
সকাল হলেই যেমন স্কুলবাস সবাইকে নিয়ে আসে স্কুলে, এখানেও ঠিক তেমন। ছোট বাচ্চারা স্কুলে যাচ্ছে। সঙ্গে যাচ্ছে তাদের ঠাকুমা, দিদিমারাও। অভিভাবক হিসেবে নয়, পড়ুয়া হিসেবেই। সংসার সামলে যাঁদের পড়াশোনা থেমে গেছে, সেইভাবে পরিস্থিতির চাপে পড়তে পারেননি, তাঁরা প্রত্যেকে এখন স্কুলে আসেন। একসঙ্গে বসে ক্লাস করেন। নোট নেন। আবার টিফিন হলে, নিজেদের নাতি নাতনির সঙ্গে খেলেনও। সব মিলিয়ে একটা সব পেয়েছির পরিবেশ এখানে।
তবে এর পেছনের প্রেক্ষাপট মোটেও সুখের নয়। দক্ষিণ কোরিয়ায় জন্মহার ক্রমশ কমছে। গোটা বিশ্বে সবচেয়ে কম জন্মহার যে দেশগুলোর, তাদের মধ্যে অন্যতম দক্ষিণ কোরিয়া। নবজাতকের সংখ্যা যেহেতু কমছে, সেহেতু সব সময় নতুন পড়ুয়া ভর্তি হতে পারছে না স্কুলগুলিতে। ফাঁকা পড়ে থাকে অধিকাংশ ক্লাস। এই অবস্থাতেই বয়স্কদের পড়াশোনার ব্যবস্থা চালু করেছে এই দেশের বেশ কিছু স্কুল। সমস্যার সম্পূর্ণ সমাধান না হলেও, আরেক উপায় শিক্ষার হার তো বাড়ছে!