সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। বাঙালির নয়নের মণি, কলকাতার রাজপুত্র। বাইশ গজের দাপটে মন্ত্রমুগ্ধ করেছিলেন নয়ের দশকেই। তারপর ভারতের অধিনায়কত্ব, গ্রেগ চ্যাপেলের সঙ্গে সংঘাত, দ্য গ্রেট কামব্যাক – এসব ইতিহাস সকলেরই জানা। একসময় লড়াই করে ফিরে আসার প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন ‘দাদা’। আজ তিনি ৪৭ বছরের। মাঠ থেকে অবসর নিয়েছেন দীর্ঘদিন। কিন্তু মাঠের বাইরে দাপট কমেনি একটুও। কোজাগরী লক্ষ্মীপূজার রাতে, বাঙালির আনন্দ-উৎকণ্ঠা ঘোরাফেরা করছিল তাঁকে নিয়েই। কারণ, তিনি হতে চলেছেন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের আগামী প্রেসিডেন্ট।
আরও পড়ুন
স্বাধীন এই দেশে বাস করে মাত্র একটি পরিবারই, রয়েছে নিজস্ব পতাকা ও মুদ্রা
থ্রিলারও হার মানতে পারত গতকাল রাতের ঘটনাবলির কাছে। নাটক পালটা নাটকে ভর করে মধ্যরাত পেরিয়ে যাওয়া বোর্ডের মিটিং-এর শেষ প্রেসিডেন্ট পদের জন্য উঠে এল যাঁর নাম, তিনি চোদ্দ বছর আগে অন্যায় ভাবে বিতাড়িত এক ট্র্যাজিক নায়ক, আমাদের ঘরের ছেলে সৌরভ-ই।
কর্ণাটক ক্রিকেট সংস্থার প্রতিনিধি ব্রিজেশ প্যাটেলই যে আগামী বোর্ড মসনদে এটা প্রায় স্থির হয়েই গিয়েছিল। অনেকে ভেবেছিলেন ডিডিসিএ প্রেসিডেন্ট রজত শর্মাই আসবেন বোর্ড প্রেসিডেন্ট হয়ে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে স্টেপ আউট ঢুকে পড়ল সৌরভের নাম। গতকালই ছিল মনোনয়ন পেশের শেষ দিন। পরিস্থিতি এমন যে আগামী ২৩ তারিখ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বোর্ড প্রেসিডেন্টের পদে বসছেন মহারাজ। সেক্রেটারি পদে জয় শাহ। প্রসঙ্গত, ২৩ তারিখ বিসিসিআই-এর বার্ষিক সাধারণ সভা।
যদিও সৌরভ বোর্ড প্রেসিডেন্টের পদে বসতে চলেছেন আগামী ৯ মাসের জন্য। তারপর তাঁকে যেতে হবে কুলিং অফ পিরিয়ডে। কিন্তু এক্ষেত্রে আরো একটি বিষয় উঠে আসছে। এই ৯ মাসের মধ্যে যদি স্পোর্টস বিল পাশ হয় পার্লামেন্টে, সেক্ষেত্রে কুলিং অফ পিরিয়ডকে স্থগিত করার ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। এ নিয়ে খানিক ধোঁয়াশা আছে।
তবে এসব কচাকচি এখন দূরের ব্যাপার। অফিশিয়াল ঘোষণা না হলেও, ঘটনার গতিপ্রকৃতি অনুযায়ী এ-কথা প্রায় নিশ্চিত করে বলা যেতে পারে, বিসিসিআই-এর আগামী প্রেসিডেন্ট সৌরভই। এতদিন সামলেছেন সিএবি-র ভার। এখন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান হিসেবে তাঁর দাদাগিরি দেখার অপেক্ষায় আট থেকে আশি, সকলেই। সঙ্গে নস্টালজিয়া তো রয়েইছে! হাজার হোক, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় বলে কথা!