এডিসনেরও ২০ বছর আগে সাউন্ড রেকর্ডার আবিষ্কার করেছিলেন এক বইবিক্রেতা

‘শব্দ’ নিজেই এক আশ্চর্য শব্দ। আর এই শব্দকে ধরে রাখার জন্য কতই না কৌশল আমাদের! আর এই প্রযুক্তিকেই এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিল ‘ফোনোগ্রাফ’-এর আবিষ্কার। বেশিরভাগ মানুষই জানেন যে, টমাস এডিসন শব্দকে প্রথম রেকর্ড করেছিলেন এই যন্ত্রটিতে, ১৮৭৭ সালে। কিন্তু পরবর্তীকালে গবেষণায় যে তথ্য উঠে এসেছিল, তা রীতিমতো চমকপ্রদ।

বিজ্ঞানীদের দাবি, ১৮৬০ সালে এডুয়ার্ড লিও স্কট নামের এক ব্যক্তি প্রথম সাউন্ড রেকর্ডার আবিষ্কার করেছিলেন৷ আর টমাস এডিসন রেকর্ডারে প্রথম শব্দকে চালাতে পেরেছিলেন। সেসবের পর প্রায় একশোরও বেশি বছর কেটে গেছে। স্কটের আবিষ্কৃত যন্ত্রটির কথা ভুলেই গিয়েছিলেন সবাই। আধুনিক কালে, ২০০৮ সালে সেই যন্ত্রটি থেকে রেকর্ড করা শব্দ চালানো সম্ভব হয়। আর এর থেকেই প্রমাণ মেলে, এডিসন নয়, প্রথম সাউন্ড রেকর্ডার বানিয়েছিলেন এই ব্যক্তি।

১৮৫৭ সালে লিও স্কট ‘ফোনঅটোগ্রাফ’ যন্ত্রটির সাহায্যে শব্দের তরঙ্গকে এর মধ্যে ধরতে পেরেছিলেন, যা একটি ধোঁয়াটে কালো কাচ বা কাগজের ওপর সরলরেখায় দেখা যেত।

স্কট ছিলেন একজন বইবিক্রেতা ও মুদ্রাকর। ১৮৫৩-৫৪ সাল নাগাদ ফোনঅটোগ্রাফ বানানোর কথা মাথায় আসে তাঁর। এই যন্ত্রটি আবিষ্কার করার সময়, তিনি মানুষের শোনার পদ্ধতিকে গুরুত্ব দিয়েছিলেন। সেই উপায়েই তিনি এটি বানাবার সিদ্ধান্ত নেন।

কিন্তু সমস্যা একটাই। নিজের আবিষ্কৃত যন্ত্রে ফ্রেঞ্চ ফোক গান গেয়ে রেকর্ড করার পর, কখনও চালিয়ে দেখেননি স্কট। তাই সেটি থেকে গেছে লোকচক্ষুর আড়ালে, অনাবিষ্কৃত অবস্থায়। পরবর্তীতে যখন এটিকে চালানো হয়, তখন এর থেকে শব্দ বেরনোয় বিজ্ঞানীরা রীতিমতো অবাক হয়ে যান।

বিজ্ঞান দিয়েছে অনেককিছুই। বহু যন্ত্র আবিষ্কার হয়েছে বিভিন্ন সময়। কিন্তু এরকম ঘটনা হয়ত অনেক প্রশ্নচিহ্নের সামনে দাঁড় করায়। তাহলে কি পৃথিবীতে এমনও কিছু আছে, যা বহু আগেই আবিষ্কার করা হয়েছিল, অথচ আমাদের কাছে এখনও অজানা থেকে গেছে! এর উত্তরের জন্য ভবিষ্যতের দিকেই তাকিয়ে থাকতে হবে আমাদের।