শেষ হয়েছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় জাপানের আত্মসমর্পণের পরই শুরু হয়ে যায় মার্কিন সেনাবাহিনীর বিজয় উৎসব। জঙ্গলের মধ্যে টাঙানো ছোট্ট সেনাছাউনিই হয়ে ওঠে সঙ্গীতময়। পরিবেশন করেছিল সৈন্যদের নিয়েই তৈরি একটি সামরিক ব্যান্ড। রেকর্ডও করা হয়েছিল সেদিনের সেই অনুষ্ঠান। প্রায় সাড়ে সাত দশক পর আবার খুঁজে পাওয়া গেল সেই রেকর্ডকে।
জেসন বার্ট নামের এক ব্যক্তি বছর খানেক আগে খুঁজে পান বিশ্বযুদ্ধের রেকর্ড করা সেই ভিনাইল ক্যাসেট। আসলে সেই ব্যান্ডের অংশ ছিলেন তাঁর ঠাকুর্দা রিচার্ড বার্ট। বাজাতেন ট্রাম্পেট। বিশ্বযুদ্ধের সময় ‘৭৪৬ ফার ইস্ট এয়ার ফোর্স’-এর সৈন্য ছিলেন তিনি। বিশ্বযুদ্ধে লড়াইয়ের পাশাপাশি ব্যান্ডের অংশ হয়ে সেনা আধিকারিকদের মনোরঞ্জনের ভার নিয়েছিলেন তিনি।
তবে এসব কথা ছোটো থেকে শুনলেও কখনো সেই রেকর্ড নিজে শোনেননি জেসন। কেননা ঠাকুর্দা নিজেই হারিয়ে ফেলেছিলেন বিশ্বযুদ্ধের ক্যাসেটটি। তবে কে-ই বা জানত সেটি অক্ষত অবস্থায় সংরক্ষিত রয়েছে বাড়িরই গ্যারাজে। জেসন বর্তমানে একজন ইতিহাসের শিক্ষক। সেই অনুপ্রেরণাও পাওয়া ঠাকুর্দার থেকেই। ঠাকুর্দারই বিশ্বযুদ্ধ সংক্রান্ত বিভিন্ন নথি ঘাটতে গিয়েই জেসন বছর খানেক আগে হাতে পান কয়েকটি ভিনাইলের ক্যাসেট। তারপর সেগুলি চালাতেই চমকে ওঠেন জেসন। আরে, এই গানগুলোর কথাই যে সে বহুবার শুনেছে ঠাকুর্দার থেকে। পাশাপাশি ভিনাইলের খামে সংরক্ষিত একটি চিঠিও পরিষ্কার করে দেয় সেই কথাই।
সম্প্রতি দুই সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে অক্লান্ত পরিশ্রম করে, ভিনাইল থেকে গানগুলিকে ডিজিটাল মাধ্যমে সংরক্ষণ করেছেন জেসন। দশটি গান মিলিয়ে একটি পূর্ণ দৈর্ঘ্যের অ্যালবামও প্রকাশ করেছেন তিনি। ‘রিলেন্টলেস’ নামের সে অ্যালবাম চাইলেই শুনতে পাওয়া যাবে স্পটিফাই-তে। তবে এখানেই শেষ নয়। জেসনের এখন একমাত্র লক্ষ্যই হল ঠাকুর্দার জীবনের এই কৃতিত্বকে গ্র্যামির সম্মান এনে দেওয়া। আর সেই জন্যই তোড়জোড় শুরু করেছেন তিনি। ২০২২ সালের সেরা ঐতিহাসিক অ্যালবাম বিভাগে লড়াই করতে নামবে ‘রিলেন্টলেস’। অন্যদিকে অ্যালবাম থেকে উপার্জিত সকল অর্থই মার্কিন সেনাবাহিনীতে অনুদান হিসাবে পাঠাবেন বলেও ঠিক করে রেখেছেন জেসন…
Powered by Froala Editor