মাত্র কয়েকদিন আগের ঘটনা। তখন লকডাউন চলছিল পুরোদমে। দোকান বাজার সব বন্ধ ছিল। সেই সময় পথে ঘুরে বেড়ানো কুকুরদের খাওয়ানোর জন্য উদ্যোগ নিয়েছিলেন অনেকেই। পুলিশের পক্ষ থেকেও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। সেই সব দৃশ্য দেখে সাধুবাদও জানিয়েছিলেন অনেকে। বেশিদিন এগোতে হল না। আমাদের মানসিকতার উল্টো পিঠটাও দেখতে পেল শহর কলকাতা। যেখানে এক পথকুকুরের মুণ্ডহীন দেহ দেখে সকালের ঘুম ভাঙে আমাদের…
ঘটনাটি ঘটেছে কলকাতার অন্যতম প্রধান জায়গা কলেজ স্কোয়ারে। সকালবেলায় এক পথচারীর নজরে পড়ে এই ভয়ংকর দৃশ্য। বঙ্কিম চ্যাটার্জি স্ট্রিটে পড়ে আছে একটি কুকুরের দেহ; মুণ্ডহীন অবস্থায়। নিমেষের মধ্যে খবর ছড়িয়ে পড়ে। ভিড়ও বাড়তে থাকে। ওই অঞ্চলে যাঁদের নিয়মিত যাতায়াত, তাঁরাও হতবাক হয়ে যান ঘটনা শুনে। অনেক পশুপ্রেমীও ঘটনাস্থলে চলে আসেন। মূলত তাঁদের উদ্যোগেই পুলিশে খবর দেওয়া হয়। এফআইআরের বদলে জেনারেল ডায়েরিও নেওয়া হয়েছে।
তবে এমন ঘটনা আবারও প্রশ্নচিহ্ন তুলে দিল আমাদের মানসিকতা নিয়ে। কয়েকদিন আগেই কেরালায় নৃশংসভাবে একটি অন্তঃসত্ত্বা হাতিকে মারা হল। আসামেও চিতাবাঘ হত্যার ঘটনা ঘটেছে। বিগত এক-দুই বছরে পশুহত্যার ঘটনা বেড়েই চলেছে গোটা ভারতে। কলকাতাও এর আগে পশুহত্যার নানা নিদর্শন দেখেছে। এনআরএস কাণ্ডের কথাই ভাবুন। আর এখানেই নজর রাখতে বলছেন পশুপ্রেমী থেকে মনোবিদরা। কখনও গরম জল, ফুটন্ত তেল ঢেলে দেওয়া, কখনও অ্যাসিড ঢেলে দেওয়া; এছাড়া হত্যা তো আছেই। এইসব আচরণ করে আমরা ঠিক কি প্রমাণ করতে চাইছি? শুধু তো কলকাতায় নয়; গোটা ভারতে এমন ঘটনা পরম্পরা দেখা যাচ্ছে। শুধুমাত্র লকডাউনের মানসিক বিপর্যয়ই কি এর কারণ? কলেজ স্কোয়ারের ঘটনা এবার সব সীমা ছাড়িয়ে গেল। এই ঘটনার প্রভাব পড়েছে বাকি পথ কুকুরদের ওপরও। একবারও কি বুঝতে চেষ্টা করব না আমরা? আবারও এমন প্রশ্ন তুলছেন পশুপ্রেমীরা। এই প্রশ্ন শহরবাসীর একাংশেরও।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
বাইকের পিছনে কুকুর বেঁধে পরিক্রমা, এবার নৃশংসতার সাক্ষী খোদ রাজধানী