Powered by Froala Editor
রঘু ডাকাতের কিংবদন্তি থেকে রামকৃষ্ণ আশ্রম - বারাসাতের কালীপুজোর গল্প
১/৮
দুর্গোৎসব বাঙালির সবথেকে বড় উৎসব হলেও, শ্যামাঙ্গী কালীর নিত্যবাস প্রত্যেক বাঙালির মনের মণিকোঠায়। বাংলার এমন কোনো শহর বা গ্রাম নেই যেখানে এক বা একাধিক কালীবাড়ি নেই। কোনো কোনো গ্রাম বা শহরের বিখ্যাত হয়ে ওঠার পেছনেও রয়েছে তাদের জাগ্রত কালীমন্দিরের ইতিকথা। তেমনই এক জনপদ, বারাসাত।
২/৮
বারাসাতের কালীপুজোর দিকে তাকিয়ে থাকে গোটা বাংলা। এক দিনের পুজো হলেও চার-চারদিন মণ্ডপ দখল করে থাকে দর্শনার্থীরা৷ প্যান্ডেলসজ্জা তো বটেই, পুরো শহর জুড়ে চোখধাঁধানো আলোকসজ্জা কালীপুজোর মরশুমে বারাসাতকে দেয় রাজবেশ। করোনার প্রকোপে এবছরের পুজো বহরে খানিকটা ছোট হয়েছে বটে, কিন্তু বারাসাতের পুজোর উদ্দীপনা সেই ফাঁকটুকুও ভরাট করে দিয়েছে। নিচে রইল বারাসাতের কিছু প্রাচীন কালীপুজোর দৃশ্য!
৩/৮
বারাসাত লরি স্ট্যান্ড বড়মা কালীপুজো - গাণিতিক উচ্চতা ১২ হাত হলেও, বারাসাতবাসীর বিশ্বাস লরি স্ট্যান্ডের, রাশি রাশি গয়নায় সুসজ্জিত বড়মার দৈর্ঘ্য আকাশচুম্বী। আর সেই বিশ্বাসেই কালীপুজোয় উপচে পড়ে ভিড়, স্থগিত হয় যানচলাচল। বড়মার সামনে অগণিত ভক্তদের দণ্ডি কাটার দৃশ্য যেন বারাসাতের চিরন্তন ঐতিহ্য। চাপাডালি মোড়ে ব্রিজের মুখে সারাবছরই দাঁড়িয়ে থাকে মা।
৪/৮
'বারাসাত লরি স্ট্যান্ড শ্রী শ্রী বড়মা কালী মন্দিরের' ঐতিহ্যশালী জাগ্রত পুজো এবছর ৭৯ বছরে পদার্পণ করল। স্থানীয় মানুষদের বিশ্বাস, বড়মা কাউকে ফেরায় না। তাইতো অগণিত মানুষের অগণিত মনষ্কামনার ভিড় উপচে পড়ে প্রতিবার বারাসাত লরি স্ট্যান্ডের বড়মা কালীপুজোয়।
৫/৮
শিবানন্দ ধাম - চোখ-ধাঁধানো আলোর রোশনাই নেই, জাঁকজমকপূর্ণ প্যান্ডেল সজ্জা নেই, তবু প্রতিবার কালীপুজোয় দূরদূরান্ত থেকে কাতারে কাতারে মানুষ জড়ো হন, বারাসাত শিবানন্দ ধামে। বারাসাত শেঠপুকুর মোড়ের পাশেই এই রামকৃষ্ণ আশ্রম।
৬/৮
১৯৫৮ সালে আশ্রম প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই হয়ে আসছে কালীপুজো। মা সারদার সাথে কালীর যে অপার যোগ! এই বছর শিবানন্দ ধামের কালীপুজো ৬৩ তম বর্ষে পা রাখল। শহুরে কোলাহল থেকে দূরে, ধীর-শান্ত-স্নিগ্ধ পরিমণ্ডপে মহারাজদের নির্ভীক উচ্চারণের এক অনন্য কালীপুজোর সাক্ষী থাকে বারাসাত।
৭/৮
বারাসাত ডাকাত কালীবাড়ি - বারাসাতের এক জাগ্রত কালীবাড়ি রঘু ডাকাতের ডাকাত কালীবাড়ি। বারাসাত চাঁপাডালি থেকে কাজিপাড়া পেরিয়ে নদীভাগ হয়ে প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তা পার হয়ে পড়ে এই ডাকাত কালীবাড়ি। জরাজীর্ণ দেহ, রোমহষর্ক গল্প নিয়ে আজও দাঁড়িয়ে আছে এই কালীবাড়ি। এর বয়স নিয়ে মতান্তর আছে, কারো মতে ৩০০ বছর তো কারও মতে ৫০০। শতাব্দী প্রাচীন বটগাছের শিকড়ই রক্ষা করছে এই ভগ্নমন্দিরকে৷
৮/৮
লোকশ্রুতি অনুযায়ী, রঘু ডাকাত ডাকাতি করতে যাওয়ার আগে এই মন্দিরে পুজো করে, নরবলি দিয়ে তারপর ডাকাতি করতে যেতেন। আজ কোনো মূর্তি নেই সেখানে, বটগাছের শিকড়কেই মাতৃরূপে পূজো করেন স্থানীয়েরা। কালীপুজো উপলক্ষে অগণিত মানুষ ভিড় করেন এই প্রাচীন ভগ্নমন্দিরে।