Powered by Froala Editor
কারোর দেড় লাখ বছরের কারাবাস, কারোর তিরিশ হাজার! পৃথিবীর ইতিহাসের কিছু দীর্ঘ শাস্তি
১/৬
‘কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হল।’ খবরের কাগজে বা চ্যানেলে এই কথাটি আসার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা আরও মনোযোগী হয়ে পড়ি। কীসের জন্য শাস্তি? কে দোষী সাব্যস্ত হল? আর কত বছরের জন্য জেলের অন্ধকারে থাকতে হবে তাঁকে? সবারই কৌতূহলের পারদ থাকে চূড়ান্ত। আর এই বিচার করার সময়ই ঘটে যায় অদ্ভুত কিছু ঘটনা। ১০-২০ বছর নয়; দণ্ডিত ব্যক্তিকে হাজার বছরের জন্য কারারুদ্ধ করার ঘটনাও ঘটেছে। অবাক হচ্ছেন? অবাক হওয়ার মতোই ঘটনা। একঝলক দেখে নেওয়া যাক এমনই কিছু ‘দীর্ঘ’ কারাবাসের ঘটনা…
২/৬
আদনান ওক্টার— একদম সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনা। ২০২১-র গোড়াতেই তুর্কির আদালতের বিচারে কারারুদ্ধ করা হল আদনান ওক্টার নামের এক মধ্যবয়সী ব্যক্তিকে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ অনেকগুলো। শিশুদের ওপর অত্যাচার, যৌন নির্যাতন থেকে শুরু করে ধর্ষণ— লিস্ট অনেক বড়ো। শুধু তাই নয়; প্রতারণা, গুপ্তচরবৃত্তির মতো ভারী অভিযোগও তাঁর বিরুদ্ধে। আর এতকিছুর জন্য তাঁর সাজা হয়েছে ১০৭৫ বছরের কারাবাস! ২০১৮ সালে ইস্তানবুল পুলিশ গ্রেফতার করেন তাঁকে। তারপরই শুরু হয় দীর্ঘ বিচারপ্রক্রিয়া। কারাবাসের সময় দেখেই অনেকের চক্ষু চড়কগাছ!
৩/৬
টেরি নিকোলস— ১৯৯৫ সাল। আমেরিকার ওকলাহোমা শহরেই ঘটে যায় বিস্ফোরণ। ১৯ শিশু-সহ ১৬৮ জন মারা যান এই বোমা বিস্ফোরণে। আর তদন্ত করতে গিয়েই পুলিশের জালে ধরা পড়েন টেরি নিকোলস। গ্রেফতার হওয়ার পর বিচার শুরু হতেও সময় লাগেনি। এবং সেখানেই কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন টেরি। তাও ৯৩০০ বছরের কারাবাস! তাও প্যারোলের জন্য আবেদনও করতে পারবেন না। কলোরাডোতে এখনও শাস্তি ভোগ করছেন টেরি।
৪/৬
চার্লস স্কট রবিনসন— ৩০ হাজার বছর! আমেরিকার ইতিহাসে সবথেকে দীর্ঘতম কারাবাসের শাস্তিটি জুটেছিল রবিনসনের কপালে। ঠিক করা হয়েছে, পাঁচ হাজার বছর করে ছয় ধাপে এই শাস্তি কার্যকর করা হবে। অবশ্য অপরাধটিও ছিল ক্ষমার অযোগ্য। ১৯৯৪ সালে আমেরিকায় তিন বছরের একটি মেয়েকে ধর্ষণ করেছিলেন স্কট রবিনসন। এই ঘৃণ্য অপরাধের জন্যই এমন শাস্তি। এমনকি, এঁরও বিচার হয়েছিল ওকলাহোমায়। আজকের দিনে ভারতের মাটিতে দাঁড়িয়ে অনেকেই হয়তো এমন শাস্তি চাইবেন। কিংবা মৃত্যুদণ্ডও চাইতে পারেন!
৫/৬
চাময় থিপায়াসু— পেশায় ছিলেন থাইল্যান্ডের পেট্রোলিয়াম অথোরিটির একজন কর্মী। আর এমন সময়ই বিরাট অঙ্কের টাকা তছরুপ করেন চাময় থিপায়াসু। বলা ভালো, ‘স্ক্যাম ১৯৮৯’। ১৬ হাজারেরও বেশি মানুষকে ঠকিয়ে প্রায় ২০৪ মিলিয়ন ডলার আত্মসাৎ করেন। ভারতীয় টাকার অঙ্কে নাই বা গেলাম আর। আর সেই অপরাধেই চাময়ের কারাবাস হল। কত বছরের জন্য জানেন? ১ লাখ ৪১ হাজার ৭৮ বছরের জন্য! পৃথিবীর ইতিহাসে দীর্ঘতম কারাবাসের সাজা! তবে এত বছর সাজা ভোগ করতে হয়নি চাময়-কে। থাইল্যান্ডের আইন অনুযায়ী ২০ বছরের বেশি কারাদণ্ডের সাজা দেওয়া যায় না। তাই আট বছর পরেই ছাড়া পেয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু রেকর্ডটি আজও অক্ষুণ্ণ।
৬/৬
মোজেস সিটহোল— অপরাধীদের কথা বলা হচ্ছে; অথচ সিরিয়াল কিলার আসবে না তা কখনও হয়! দক্ষিণ আফ্রিকার কুখ্যাত সিরিয়াল কিলার হলেন মোজেস সিটহোল। নব্বইয়ের দশকে দক্ষিণ আফ্রিকায় যার তাণ্ডব ছিল মারাত্মক। ৩৮টি খুন, ৪০ জনকে ধর্ষণ এবং ছয়টি ডাকাতির ঘটনা— মোজেস সিটহোলের অপরাধের তালিকা অনেক দীর্ঘ। ‘এবিসি মার্ডারস’ হিসেবেই বিখ্যাত হয়ে আছে সেই অধ্যায়। ১৯৯৭ সালে ২৪১০ বছরের জন্য কারাবাস হয় তাঁর। সর্বনিম্ন ৯৩০ বছর থাকতেই হবে জেলের অন্ধকারে।