ষাট, সত্তরের দশক। এই সময় পৃথিবী অনেক আগুন দেখেছে। বেশ কয়েক বছর আগেই শেষ হয়ে গিয়েছিল একটা বিশ্বযুদ্ধ। কিন্তু আগুন নেভেনি। পৃথিবীর অন্যান্য জায়গার মতো যুদ্ধ দেখেছিল গুয়াতেমালাও। দীর্ঘ ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা সেই গৃহযুদ্ধ অনেককে কেড়ে নিয়েছিল। পরবর্তীকালে যাদের পরিচয়ও পাওয়া যায়নি, বদলে হাতে এসেছিল কিছু হাড়। আজও অজ্ঞাতপরিচয়ের তকমা পড়ে আছে তারা।
আরও পড়ুন
কৃষকের সন্তান থেকে প্রধানমন্ত্রী, গৃহযুদ্ধ থামিয়ে শান্তিতে নোবেল আবি আহমেদের
কোমালাপা। গুয়াতেমালার পাহাড় আর বনে ঘেরা একটা জায়গা। ২০০৩ সালে এখানেই নৃতত্ত্ববিদরা খননকাজ আরম্ভ করেন। মাত্র কয়েক ফুট নিচে যেতেই পাওয়া যায় বেশ কয়েকটি হাড়। মানুষের হাড়। আস্তে আস্তে সেই সংখ্যা বাড়তে থাকে। কিন্তু এত মানুষের হাড় এল কী করে ওই জায়গায়?
আরও পড়ুন
ক্রিসমাসের দিন, বন্দুক নামিয়ে বিশ্বযুদ্ধের ময়দানেই আলিঙ্গন দুই প্রতিপক্ষের
ইতিহাসবিদরা তুলে ধরলেন গুয়াতেমালার গৃহযুদ্ধের কথা। ১৯৬০ থেকে ১৯৯৬—দীর্ঘ ৩৬ বছর চলেছিল এই যুদ্ধ। সেই যুদ্ধেই অনেকে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন, পরবর্তীতে যাঁদের খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাঁদেরই দেহাবশেষ কি এগুলো? প্রশ্নটি আরও জোরালো হল, যখন প্রমাণ পাওয়া গেল গৃহযুদ্ধের সময় এই কোমালাপার সাইট ৩১৭-এ একটি মিলিটারি বেস ক্যাম্প ছিল। হয়ত সেই সময় নিখোঁজ হওয়া বেশ কিছু মানুষকে হত্যা করে এখানে পুঁতে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন
জাপানি বোমা থেকে আমেরিকান সেনার দখলদারি – দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সাক্ষী কলকাতা বন্দরও
সেই সম্ভাবনাই এখন প্রায় প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে। কিন্তু এদের পরিচয় কী? যা পড়ে আছে, সেটা তো শুধুই হাড়। এমন কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি যেখান থেকে একটি দেহকেও শনাক্ত করা যায়। আজও সেই হাড়গুলি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে রয়েছে। হয়ত এর মধ্যেই কেউ খুঁজে পাবে তাঁর নিখোঁজ ভাইকে, স্বামীকে, চার্চের যাজককে। এখনকার উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে ডিএনএ ম্যাপিংয়ের চেষ্টা করা হচ্ছে। সফল হলে, খোঁজ পাওয়া যাবে কয়েক বছর ধরে হারিয়ে যাওয়া মানুষদের। ততদিন, অপেক্ষায় সেখানকার মানুষেরা।