এই মুহূর্তে গোটা পৃথিবীই লকডাউনের আবহে কাটাচ্ছে। মানুষজন ঘরবন্দি; কাজকর্ম থমকে আছে। তবে শুধু পৃথিবীতেই কি লকডাউন চলছে? বিজ্ঞানীরা বলছেন, তা নয়। এবার সূর্যেও এমন দশা শুরু হয়েছে। সেখানেও একপ্রকার ‘লকডাউন’ই চলছে। আর তার জেরেই মহাকাশ তো বটেই, পৃথিবীর ওপরও প্রভাব পড়তে চলেছে।
সূর্যে ঠিক কীসের লকডাউন পরিস্থিতি? বিজ্ঞানীদের ভাষায় একে বলে ‘সোলার মিনিমাম’। দিনের বেলা আকাশের দিকে তাকালে যে গনগনে আগুনের গোলাটিকে দেখতে পাই, সেই তেজ কমে যায় এই সময়। সূর্য অনেকটা নিস্তেজ হয়ে পড়ে। ফলে গরমও কমে আসে। সেই প্রভাবই পড়ে পৃথিবীতে। ‘সোলার মিনিমাম’ পিরিয়ডে পৃথিবী শীতল হবে। যারা গরমের দেশের মানুষ, তাদের কাছে এই সংবাদটি আনন্দ দিতে পারত। কিন্তু তার কোনো লক্ষণ দেখছেন না নাসার বিজ্ঞানীরা। কারণ, সূর্যের তেজ কমে যাওয়া মানে তার ভেতরে ঘটে চলা নিরন্তর প্রক্রিয়ারও স্তিমিত হয়ে আসা। আর সেই প্রভাব মারাত্মক। অন্তত দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস করে তাপমাত্রা কমতে পারে।
এর ফলে কী কী হতে পারে? বিজ্ঞানীদের মতে, জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটবে। ব্যাপক প্রভাব পড়বে চাষবাসেও। এছাড়া এই ‘সোলার মিনিমাম’ সময়ে অনেক কসমিক রে সূর্য থেকে বের হয়। ফলে মহাকাশের স্পেস স্টেশন ও অন্যান্য জায়গায় মহাকাশচারীদের ক্ষতি হতে পারে। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের ওপরও প্রভাব পড়বে। ফলে বজ্রপাতের সংখ্যা বাড়তে পারে।
ইতিমধ্যেই সূর্যের চৌম্বকশক্তি হ্রাস পেয়েছে। এসব কারণেই প্রমাদ গুনছেন নাসার বিজ্ঞানীরা। তাঁদের মতে, বিগত কয়েক শতকের অন্যতম ভয়ংকর ‘সোলার মিনিমাম’ দেখতে চলেছি আমরা। তবে এই পরিস্থিতি সাময়িক। এই অন্ধকার দশা কেটে গেলেই আবার স্বমহিমায় আসবে সূর্য। তবে ততদিন এই ‘সৌর লকডাউনের’ সমস্যা সহ্য করতেই হবে।