কেবল মাত্র বীজ নয়, এখন থেকে সংরক্ষণ করা হবে প্রয়োজনীয় সোর্স কোড ও সফটওয়্যারও। এতদিন নরওয়েতে বরফের নীচে একটি দুর্গ বানিয়ে তাতে বীজ সংরক্ষণ করার ঘটনা অনেকেরই জানা। হাজারো বিপর্যয়ের পরেও যাতে প্রাণের অস্তিত্ব হারিয়ে না যায় পৃথিবী থেকে, সে-উদ্দেশ্যেই বিভিন্ন গাছের বীজ সংরক্ষণ করে রাখা রয়েছে সেখানে। এই ভল্টটি ‘গ্লোবাল সিড ভল্ট’ নামে পরিচিত বিশ্বের কাছে। কিন্তু মাইক্রোসফটের গিটহাবের সমস্ত সোর্স কোড সংরক্ষণের নয়া চিন্তাভাবনা সাড়া পড়েছে গোটা দুনিয়ায়।
বিশেষত ভবিষ্যতের জন্যই এমন উদ্যোগ মাইক্রোসফটের৷ ২০১৮ সাল থেকে গিটহাব বানিয়ে সমস্ত কোডকে একজায়গায় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল এই কোম্পানিটি। কোনো নিউক্লিয়ার যুদ্ধ, বা অন্য কারণে সমস্ত সফটওয়্যার হারিয়ে গেলেও তাকে পুনরুদ্ধার করার জন্যই এই উদ্যোগ।
২০১৭ সালে আর্কটিক ওয়ার্ল্ড আর্চিভ গ্লোবাল সিড ভল্টের কাছে একটি বাতিল কয়লাখনিতে বিভিন্ন তথ্যের ডিজিটাল রেকর্ড ও সিনেমাকে সংরক্ষণ করা শুরু করেছে। দেখাদিখি, মাইক্রোসফটও গিটহাবের সমস্ত সোর্স কোডকে ওই ভল্টে ডিজিটালি রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এই দুটি ভল্টই প্রাকৃতিক দিক থেকে পুরোপুরি সুরক্ষিত। সংরক্ষিত কোডগুলি সিনেমার রিলের মত দেখতে যা এনকোডিং করে ওই ভল্টে রাখা হয়েছে। পরিবেশের কথা মাথায় রেখে সমস্ত তথ্য সেখানে সংরক্ষণ করা হয়েছে। শুকনো ঠান্ডায় অর্থাৎ বর্তমান পরিস্থিতিতে এই কোডগুলি ২০০০ বছর ধরে একই রকম থেকে যাবে, দাবি মাইক্রোসফটের। সাধারণ পরিবেশে এগুলোর আয়ু ৭৫০ বছর।
উত্তর মেরু থেকে কয়েকহাজার কিলোমিটার দূরে এই ভল্টে সুরক্ষিত থাকবে আগামী দিনের ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম। পৃথিবীর সমস্ত হার্ড ড্রাইভ নষ্ট হয়ে গেলেও অন্তত আরও কয়েকহাজার বছর টিকে থাকবে এই ভল্ট। পুনরুদ্ধার করে আবার একই অবস্থায় ফিরিয়ে আনা কতখানি বাস্তবায়িত হবে তা সময় বলবে।